সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : অভাবে তাড়নায় দীর্ঘ ১৫ বছর আগে পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে স্বামীকে তালাক দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিষ্ণু রানী। এর পরেই অভাব ঘোচাতে ভাগ্য পরিবর্তনের খোঁজে গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত লক্ষী দাসের ছেলে জয়দেব দাস রিকশার গ্রেজে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। অভাব যে জয়দেব দাসের শেষ হচ্ছে না।

এই জয়দেব দাসকে প্রায়ই গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়। বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে। কথা হয় জয়দেব দাসের সাথে। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জয়দেব দাস সাংবাদিকদের কাছে তার জীবনের করুণ ইতিহাস তুলে ধরেন। এ সময় জয়দেব দাস কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তখন জয়দেব দাস সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘর তার নিজের নামে বরাদ্ধ পাওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানান।

জানা গেছে, জয়দেব দাস চার বছর পূর্বে নতুন বিবাহ করেছেন জীবনের তাগিদে। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও তার মাকে নিয়ে গোলখালী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে লিকন হাজীর একটি ভাড়াটিয়া ঘরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। পাঁচ মেয়ে বিবাহ দেওয়ার পরে তার দুই ছেলে বিবাহ করে বাবার কাছ থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন থাকেন। এখন তিনি কোন রকমে একটি রিকশার গ্রেজে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। সংসার চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। তার পাশে দাঁড়াবার মত কাউকে তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

জয়দেব দাস বলেন, ‘বিবাহের প্রথম জীবনে একটু সুখ পেয়েছি কিন্তু এখন শেষ মুহূর্তে মৃত্যুকে স্মরন করছি। নেই কোন জায়গা জমি,নেই কোন ঘর-বাড়ি। থাকি ভাড়াটিয়া ঘরে। জন্মের পর থেইকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন কইরা নৌকার পক্ষে সব সময় কাজ করিতেছি। শুনেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় মানুষকে ঘর দিতেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরের জন্য ইউএনও এর কাছে আমি একটি দরখাস্ত করিয়াছি। আমি যদি একটি ঘর পাইতাম তাইলে ভালভাবে জীবন-যাপন করিতে পারিতাম।’

এ বিষয়ে গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মু. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আসলেই জয়দেব দাস অসহায় মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া তার একটি একটি ঘর পাওয়া একান্ত জরুরি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ কুমার বলেন, ‘জয়দেব দাসের দরখাস্ত পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(এসডি/এসপি/জানুয়ারি ০৮, ২০২১)