আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা : অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি লক্ষ করা গেছে। বেড়েছে চুরি ছিনতাই ও হত্যাসহ রাজনৈতিক অস্থিরতা। গত এক মাসে থানা ও এর আশপাশের এলাকার বেশ কয়েকটি দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থান সমুহ হচ্ছে  পৌরশহরের উপজেলা পরিষদ সড়কে একটি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান সহ পল্লীর গোয়ালঘর থেকে একইসাথে ৪ টি গরু চুরি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া ও প্রায় প্রতিনিয়তই শহর ছাড়াও উপজেলার কোথাও না কোথাও চুরি সংঘটিত হওয়ায় ভূক্তভোগি মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার গভীর রাতের কোন একসময় পৌরশহরের খোদ উপজেলা পরিষদ সড়কে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন এবং সোনালী ব্যাংক শাখা লাগোয়া জামান কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানে দুধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। চতুর চোরদল এসময় বিশেষ কায়দায় বন্ধ প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি পিসি এবং একটি স্ক্যানার মেশিন চুরি করে দ্রুত সটকে পড়ে।পরদিন সোমবার প্রতিষ্ঠান মালিক বদরুল মন্ডল স্বপন এসে দেখে দোকান চুরি হয়েছে।

এ ব্যাপার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায়। মাত্র কয়েকদিন আগে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পার্বতীপুর গ্রামের স্টুডিও মালিক রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়ে।এদিকে সংঘবদ্ধ চতুর চোরদল বসতবাড়ীর গোয়াল ঘর থেকে একইসাথে ৪টি গরু চুরি করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।পরে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গরু গুলো উদ্ধার সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। এর সপ্তাহখানেক আগে শহরের হযরত মাইক সার্ভিস প্রতিষ্ঠান থেকে মূল্যবান ৬ টি ব্যাটারি এবং গাইবান্ধা সড়কে জয়নাল আবেদিনের বসতবাড়ীর ঘরে তালা কেটে প্রায় পৌনে দুইলাখ টাকা মূল্যের চার্জার চালিত একটি অটোবাইক চুরি করে নির্বিঘ্নে কেটে পড়ে।এ ব্যাপারে জয়নাল আবেদিন থানায় ডিডি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান

এ দিকে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি রবিউল হোসেন পাতা বলেন, আগের মতো পেশাদার চোর নাই তবে বর্তমান সময়ে যে চুরি ঘটনা ঘটায় তা দেখলে পেশাদার চোরে চাইতেও অধিক ভয়ংকর । উপজেলা জুড়ে আগে চেয়ে চুরি ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের মতো এখন আর প্রকাশ্যে জুয়া খেলতে হয় না প্রযুক্তি এখন জুয়া খেলাকে মানুষের পকেটে আর ঘরের কোণে এনে দিয়েছে। যা আজ প্রকাশ পেয়েছে ক্যাসিনো ও ক্রিকেট জুয়া হিসাবে। গ্রাম গঞ্জে এসব জুয়া খেলা চলে গিয়েছে এছাড়াও মাদক এখন সহজলভ্য হয়ে পরেছে মোবাইলে কল করলেই পাওয়া যাচ্ছে যে কোন ধরণের মাদক । একশ্রেনীর জুয়ারু ও মাদক কারবারিরা নিজেদের ব্যয় বহনে এসব চুরি ঘটনা ঘটাচ্ছে এটা পরিস্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে।

এবিষয়ে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো.আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমান পলাশবাড়ী থানা এলাকায় আইন শৃংখলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে চুরিসহ নানা অপরামূলক ঘটে যাওয়া ঘটনার অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। এবং তদন্ত শেষে পুলিশের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে ।

উল্লেখ্য ,বর্তমান শীতের রাতে ঘনকুয়াশার কারনে পৌর শহরের জনগুরুত্বপুর্ন রাস্তায় প্রতিনিয়তই ছিনতাই ও ডাকাতি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সন্ধার পর চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ১০ জানুয়ারী আমলাগাছী এলাকা থেকে পুলিশ ২ ছিনতাইকারীকে আটক করলে ও অপরাধের তুলনায় অপ্রতুল।শুধু তাই নয় মাদক প্রযুক্তি কে কাজে লাঘিয়ে জুয়া খেলায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে ।

(এ/এসপি/জানুয়ারি ১২, ২০২১)