আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিয়ে বিতর্কে জড়ানো ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের জন্য নতুন কিছু নয়। তার সবশেষ নজির ‘দেশ শাসন করা নারীদের কাজ নয়’- এমন উদ্ভট মন্তব্য। গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে তিনি দাবি করেছেন, মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্যের কারণে নারীরা দেশ শাসনে অযোগ্য।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘এটা (দেশ শাসন) নারীদের জন্য নয়। আপনি জানেন, নারী-পুরুষের মানসিকতা পুরো আলাদা। আপনি (নারী) এখানে এলে বোকা হয়ে যাবেন। সুতরাং… ওটাই দুঃখের গল্প।’

শুধু নারী হওয়ার কারণে নিজের মেয়েকেও আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার অনুমতি দেননি দুতের্তে।

একটি মহাসড়ক প্রকল্প উদ্বোধনের সময় ৭৫ বছর বয়সী এ নেতা বলেন, ‘আমার মেয়ে [নির্বাচনে] লড়বে না। আমি ইন্দেকে (প্রেসিডেন্টের মেয়ে সারা দুতের্তের ডাকনাম) নিষেধ করেছি। কারণ, আমি [প্রেসিডেন্ট হয়ে] যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সেটা তাকেও যেতে হবে ভেবে তার প্রতি আমার করুণা হয়।’

সারা দুতের্তে অবশ্য দাভো শহরের মেয়র হয়ে ইতোমধ্যেই নিজের নেতৃত্বগুণ প্রমাণ করেছেন। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে তাকে অনেকেই সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। এবিষয়ে সাম্প্রতিক এক জরিপে পছন্দের শীর্ষে নাম এসেছিল সারার। এরপরও তাকে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার অযোগ্য বলে ভাবছেন বাবা রড্রিগো দুতের্তে।

অথচ ফিলিপাইনে আগেও দুইজন নারী প্রেসিডেন্ট দেশ শাসন করেছেন- গ্লোরিয়া ম্যাকাপাগাল আরোয়ো এবং কোরাজন অ্যাকুইনো। আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর তালিকায়ও ওপরের দিকে নাম রয়েছে আরও দুই নারীর- বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট লেনি রব্রেদো এবং সিনেটর গ্রেস পো।

রড্রিগো দুতের্তে অবশ্য এসবের ধার ধারেন না। তিনি অনেকবারই আপত্তিকর, যৌনতাবাদী ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য রেখেছেন। যদিও ফিলিপিনো প্রেসিডেন্টের কার্যালয় তার এসব বক্তব্যকে নিরীহ কৌতুক বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া, ফিলিপাইনের নারী ভোটারদের মধ্যেও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে দুতের্তের।

বাবার বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় সারা দুতের্তেই বর্তমানে ফিলিপাইনের ফার্স্ট লেডি। ইতোমধ্যেই তিনি বাবাকে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নেই তার। গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সারা নিজেই।

তিনি বলেছেন, ‘আমি চালাকি করছি না বা শেষ মুহূর্তে যোগ দিতে যাচ্ছি না। গোটা দেশ যদি বিশ্বাস করতে না চায়, তাহলে তো আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারি না। সবাই প্রেসিডেন্ট হতে চায় না, আমি তাদের মধ্যেই একজন।’

সারা বলেন, ‘আমি কী করতে পারি তার ওপর আস্থা ও আত্মবিশ্বাস রাখায় সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে আমি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী না হওয়া মানে পৃথিবী শেষ হয়ে যাওয়া নয়।’ সিএনএন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২১)