ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কোটচাঁদপুর পৌর নির্বাচনী পরিবেশ।ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে চলছে সন্ত্রাসী হামলা।

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে পৌর নির্বাচন। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও দু’জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীর গলার কাঁটা হতে পারেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। যার সুফল পেতে পারে বিএনপি এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ।

কোটচাঁদপুর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি শাহাজাহান আলী, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক সালাহউদ্দীন বুলবুল সিডল, নারকেল গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোবাইল প্রতীকে নির্বাচন করছেন পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুজ্জামান সেলিম।

গত ১১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্ধের পর সব প্রার্থীই বেশ জোরে-সরেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে গত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় এবারের পৌর নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে দুঃচিন্তার শেষ নেই। তারপরও চলছে প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের চুলচেরা বিশ্লেষণ।

ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই ভোটের মাঠ উত্তপ্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর কর্মীরা। গুরুতর আহত হয়ে রবিউল নামে একজন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসকল ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিলও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুল আলম জানান, ‘দুটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ দুটির বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী সালাউদ্দীন বুলবুল সিডল বলেন, নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। ভোটারদের ভোট দেয়ার পরিবেশ থাকলে আমি শতভাগ আশাবাদী জয়লাভ করবো।’

আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী শাহাজাহান আলী জানান, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটাররা নৌকা প্রতীককেই বেছে নিবে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটাদের মাঝে খুশির আমেজ তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশেই ভোট হবে বলে আশাবাদী।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম জিরে বলেন, আমার বিগত দিনের কর্মকাণ্ড বিবেচনা করেই ভোটাররা পুনরায় আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’ তিনিও ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদুজ্জামান সেলিম জানান, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সুখ দুংখের সাথে জড়িয়ে আছি। নৌকা প্রতীক না পেলেও করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দিনরাত সাধারণ মানুষের জন্য মেহেনত করছি। এগুলো তারা মনে রেখেই আমার মোবাইল ফোন মার্কাকেই জয়ী করবে ইনশাল্লাহ।’

এবারের পৌর নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌর এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৯৩। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৪৮৫ জন এবং মহিলা ভোটার ১৪ হাজার আটজন। নয়টি ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৪টি।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২১)