স্টাফ রিপোর্টার : বাজার নিয়ন্ত্রণে এবার সিদ্ধ চালের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে এ চাল আমদানির রেগুলেটরি তুলে নেয়া হয়েছে। এর আগে হাস্ক ও ভাঙা চালের আমদানি শুল্ক কমিয়েছিল সরকার।

রাষ্ট্রপতির আদেশে রবিবার (১৭ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধ চালের আমদানি শুল্ক কমানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে হাস্ক, সিদ্ধ (বাসমতি ও অটোমেটিক চাল বাদে) এবং ভাঙা চাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদনি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।

এর আগে ৭ জানুয়ারি হাস্ক ও ভাঙা চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। সেই সঙ্গে চাল আমদানির রেগুলেটরি ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

রবিবারের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গত ৭ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপন রহিত করা হয়েছে। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই প্রজ্ঞাপনের আওতায় রেয়াতি হারে চাল আমদানির আগে প্রতি চালানের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত ন্যূনতম যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই প্রজ্ঞাপন বলবৎ থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৭ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনেও এ শর্ত রাখা হয়েছিল। নতুন প্রজ্ঞাপনে শুধু সিদ্ধ (বাসমতি ও অটোমেটিক চাল বাদে) চাল আমদানির শুল্ক কমানোর তথ্য অতিরিক্ত যুক্ত করা হয়েছে।

৭ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনের আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ‘চালের দাম নিয়ে ভোক্তাদের যাতে কষ্ট না হয়, আবার কৃষকও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় চাল আমদানির সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

মন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘কেবল বৈধ আমদানিকারকরা ১০ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রণালয়ে আমদানির আবেদন করবেন। সেখান থেকে মন্ত্রণালয় কাকে কী পরিমাণ আমদানি করতে দেবে সেই সিদ্ধান্ত জানাবে। অনুমোদন পাওয়ার পর কে কী পরিমাণ আমদানি করেছে সেই হিসাবও রাখা হবে।’

চালের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে গত ২৭ ডিসেম্বর কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘চালের দাম কেন এত বাড়বে, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। ১-২ টাকা বাড়াও কিন্তু অনেক বাড়া। সেখানে ৩২-৩৩ টাকার মোটা চাল ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারণগুলো কি?’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষণা বলছে, পরপর চার দফা বন্যায় এবার ধান উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল কম উৎপাদন হতে পারে। কিন্তু তারপরও যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হবে, তা দিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়েও কমপক্ষে ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা।

সরকারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে নাজিরশাইল ও মিনিকেটের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। মাঝারি মানের চাল পাইজাম বা লতার দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর মোটা চাল বা স্বর্ণা ও চায়না ইরির দাম বেড়েছে ৪৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়েছে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২১)