আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধা পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মতলুবর রহমান ১২ হাজার ৩ শত ৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী হিসাবে হিসাবে স্বতন্ত্র মো. আনওয়ার-উল-সরওয়ার (রেল ইঞ্জিন) প্রতিকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৯ শত ৭০ ভোট। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন পেয়েছেন ৭ হাজার ৩ শত ১ ভোট পেয়ে তিনি তৃতীয় হয়েছেন।

সারাদিন শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচনে ভোট গ্রহন হলেও নির্বাচন শেষে ভোট কেন্দ্রে ভোট গণণা না কের কেন্দ্র হতে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিয়ে যেতে ধরলে। গাইবান্ধা পৌর নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কোমরনই কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি আটকে দেয় এলাকাবাসী। এ ঘটনায় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসী ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র‌্যাব, পুলিশ , বিজিবি র পক্ষ হতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এসময় একটি সরকারি গাড়িতে আগুন ও তিনটি গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে । এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করে গাইবান্ধা নির্বাচন অফিসে ব্যালট পেপার নিয়ে যেতে চায় প্রশাসন। পরে অনেক অনুরোধ করা হলেও তারা কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করতে চায়নি। এরই একপর্যায়ে ব্যালট পেপার নিয়ে যেতে চাইলে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংঘর্ষ বেধে যায়। পৌরসভা নির্বাচনে শনিবার ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় পৌরসভার পূর্ব কোমরনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ব্যালট ও মালামাল নিয়ে ফেরত আসার সময় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আনওয়ার উল সরওয়ারের কর্মী সমর্থকেরা।

এ সময় তারা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট এবং র‌্যাবের আরও তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে। গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে এ পর্যন্ত ৫ জন। এ ঘটনায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ্যসহ কয়েকশত জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে ১৭ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে সদর থানায় র‌্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে দু’টি মামলা করা হয়।

র‌্যাব ও পুলিশ জানায়, দিনভর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও দিন শেষে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আনোয়ার উল সরোয়ার সাহিবের বাড়ি সংলগ্ন ভোট কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা হয়। এসময় ফলাফল সঠিক নয়, দাবি করে ওই প্রার্থীর সমর্থকরা নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের আটকে রাখে। খবর পেয়ে র‌্যাব-পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট গেলে তাদের উপর উত্তেজিত স্থানীয়রা হামলা চালায়। এসময়, র‌্যাব-পুলিশ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রাটের ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলায় র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি ও ফায়ার সার্ভিসের ১০ জনসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদরে বলেন, র‌্যাবের মামলায় ৪১ এবং পুলিশের মামলায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখ্যসহ দেড়শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পৃথক ভাবে দুটি মামলা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে এ বিষয়ে পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে এ হামলা চালানো হয়। হামলার সাথে জড়িত কেউই ছাড় পাবেনা।

(এ/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২১)