স্টাফ রিপোর্টার : ধর্ষণের শিকার জীবিত কিংবা মৃত কোনো নারী-শিশুর ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীদের ছবি প্রকাশে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জিও জানানো হয়েছে রিট আবেদনে।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন এই রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের বিষয়টি আইনজীবী নিজে নিশ্চিত করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে এই রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটের বিষয়ে আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার বিধান রয়েছে। তবে, অনেক ক্ষেত্রে এই বিধানের বাস্তবায়ন লক্ষণীয় নয়। এমন বাস্তবতায় রিটটি করা হয়েছে।’

রিটে ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারী ও শিশুর গণমাধ্যমে ছবি ও পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এ ধরণের ছবি প্রকাশে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর আগামী রোববার রিটটি শুনানি হতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার কোনো নারীর ছবি প্রকাশে আইনে বাধা থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ছবি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এসব ছবি প্রকাশের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাই সংক্ষুব্ধ হয়ে এ রিট দায়ের করেছি।’

রিটে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ না করতে আইনি বিধানের বাস্তবায়ন চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই ছবি প্রকাশে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন এক আইনজীবী। রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আইনের সংস্পর্শে আসা কোনো শিশুর ছবি বা পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে সকল গণমাধ্যমকে ভবিষ্যতে আইনের সংস্পর্শে আসা কোনো শিশুর ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৯, ২০২১)