তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ জেলা কৃষকলীগ সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বানিয়াচং উপজেলার ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা দিদার হোসেন বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষক লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজার এলাকায় ১৯৮৮-৮৯ সালে বানিয়াচং উপজেলার সুলতানপুর মৌজার ১৮ দশমিক ৮৮ একর জায়গা ১৭ জন ভূমিহীনের নামে বন্দোবস্ত দেয় সরকার। কিন্তু তাদের সরিয়ে দিয়ে ওই জায়গা দখল করেন হুমায়ুন রেজা।

আরও জানা যায়, ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের তথ্য উল্লেখ করা হয় ওই মামলায়। সরকারের কোন অনুমতি না নিয়ে তিনি দখলকৃত জায়গার গাছ কাটা, মাছ বিক্রিসহ বিভিন্নভাবে আত্মসাত করে আসছিলেন। সরকারী জায়গা অবৈধভাবে দখল করে তিনি তৈরি করেছেন ধানের জমি। এছাড়া মসজিদ-মাদ্রাসা বানিয়ে তিনি দখল টিকিয়ে রাখার কৌশল নেন।

অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়, সরকার কর্তৃক বনায়নকৃত ৫০টি গাছ কেটে বিক্রি করে দুই লাখ টাকা আত্মসাত করেন। সরকারি জায়গা ৫ ফুট গর্ত করে মাটি বিক্রি করে কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। সরকারী জায়গায় বিশাল পুকুর খনন করে তিনি মাছ চাষ করেন। ১০ বছরে মাছ বিক্রি করে তিনি ২ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। মামলায় উল্ল্যেখ করা হয়, সরকারি ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও বনায়ন ধ্বংস করে অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করেন।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমিহীন পরিবারের পক্ষ থেকে গত ২১ ডিসেম্বর বানিয়াচংয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পান স্থানীয় ভূমি অফিস কর্মকর্তারা। এ প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীর রেজার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বানিয়াচং থানায় এজাহার প্রদান করলে মামলা দায়ের হয়।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, হুমায়ন কবীর রেজা ভূমিহীনদের জায়গা দখল করে বিপূল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয় ভূমিহীনদের অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মামলা দায়ের করা হয়।

এ ব্যাপারে হুমায়ুন কবীর রেজার সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(টিএইচ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১)