তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জবাসী যেন কিছু ভিন্ন রকম ভাষা শহীদ দিবস পালন করলো। তবে ভাষা আন্দোলনের প্রায় ৬৯ বছর পর উৎসব মূখর পরিবেশে একুশের প্রথম প্রহরে জেলাবাসী শ্রদ্ধা নিবেদন করলো নব নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আর এ ভিন্নতা শুধু একটি সাহসী উদ্যোগের জন্য। এটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ।

জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর বিষয়টি উপলব্ধি করেছিলেন উদ্দমী, আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তিনি ২১ সালের ২১ কে সামনে রেখে পরিকল্পনা করেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষে জাতীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট আবু জাহির কে নিয়ে এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এর পর অর্থের জোগাড় করতে সুযোগ সন্ধানে থাকেন। কিন্তু হঠাৎ বদলীর আদেশ আসে। কিছুটা থেমে যান। আবার ঐ আদেশ স্থগিত হয়। নাছোড়বান্দা জেলা প্রশাসক কাবিখা প্রকল্প থেকে দুলক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে কাজ শুরু করেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ১ দিনের বেতন এর টাকা নিয়ে এগিয়ে আসেন। এল আর ফান্ডে যা ছিলো তাও ঢালা হয়। শুরু হয় নির্মাণ যুদ্ধ। মাত্র ২০ দিনে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি। ১ম প্রহরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদন এর দৃশ্য তাকে করেছে উজ্জীবিত, করেছে গর্বিত। নিজে শ্রদ্ধা জানানোর পর কালেক্টরেট ভবনের দুতলায় দাঁড়িয়ে তিনি আনন্দে অবলোকন করেন সবকিছু।

এক পর্যায়ে নেমে এসে স্কাউটদের নিয়ে নিজ হাতে এলোমেলো ভাবে রাখা পুস্পস্তবক গুলো সাজিয়ে দেন। হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যতদিন থাকবে, ততদিনে জেলাবাসীর হৃদয়ে থাকবে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নাম। গতকাল রাতে শ্রদ্ধা নিবেদন কালে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা ও দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক প্রকৌশলী সুশান্ত দাস গুপ্ত, সিনিয়র সাংবাদিক এড. রুহুল হাসান শরীফ প্রমুখ।

(টিএইচ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১)