রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মালিককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে নির্যাতনের পর পুকুরের মাছ লুট করা হয়েছে। বুধবার ভোর চারটরিে দিকে সাতক্ষীরা সদরের আড়ুয়াখালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে লুটকারিরা স্থানীয় ইউপি সদস্যের সেটে মাছ বিক্রি করে উল্টে থানায় অভিযোগ দিয়ে পুকুরের মালিকপক্ষকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আড়ুয়াখালি গ্রামের ছফুরা খাতুন জানান, ২০১৬ সালে স্থানীয় চ্যাংমারি বিলে পুকুর সহ ২০শতক জমি কিনে নামপত্তন করে তার তিন ছেলে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। একই এলাকার কুরবান আলী ও পলাশ সরদার ২০১৪ সালে একই এলাকায় কেনা জমি পছন্দ না হওয়ায় তার ছেলেদের কেনা পুকুরসহ জমি দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে দেওয়ানী আদালতে মামলাও রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তারা পুকুরের মাছ ধরার জন্য পানি সেচ দিতে শ্যালো মেশিন বসায় ছেলে হযরত আলী।

বুধবার ভোর চারটার দিকে কুরবান আলী, পলাশ হোসেন, আমিনুর রহমান, সাদ্দাত হোসেন, শফি গাজী, হাসান ও এনামুলসহ কয়েকজন হযরত আলীর গলায় দা ধরে হাত পা ও মুখ বেঁধে ফেলে বেধড়ক মারপিট করে রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্লাসকাপ, ট্যাবলেট, চ্যাং, শোলসহ পুকুরের প্রায় এক লাখ টাকার মাছ লুট করে একই গ্রামের আজাহারুল ইসলামের ভ্যানে করে বাইপাস সড়কে কুশখালি ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের সেটে নিয়ে বিক্রি করে। অথচ বুধবার রাতে সহকারি উপপরিদর্শক সুভাষ শিকদার তাদেরকে মাছ চুরির অভিযোগ এনে কোন নোটিশ ছাড়াই বৃহষ্পতিবার সকাল ১০ টায় জমির কাগজপত্র নিয়ে থানায় যেতে বলেন।

তারা বৃহষ্পতিবার থানায় গেলে পলাশের অভিযোগ মোতাবেক শনিবার সকাল ১০টায় তাদেরকে কুশখালি ইউপি চেয়ারম্যান ও নাটের গুরু চোরের থলিদার ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের কাছে হাজিরা দিতে বলেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কিত কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলা দিয়ে চালান দেওয়ার হুমকি দেন। ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম প্রতিপক্ষ পলাশ হোসেনও কুরবান আলীর পক্ষ নিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন সফুরা। মাছ লুটের টাকা মনিরুল মেম্বরের মাধ্যমে পুলিশকে দিয়েই তারা তাদেরকে(সফুরা) পাল্টা হয়রানি করবেন বলে হুমকি দিয়েছে তার প্রতিপক্ষরা।

ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম তার মাছের সেটে মাছ বিক্রির কথা অস্বীকার না করেই বলেন, কেউ মাছ বিক্রি করতে এলে সেটা চুরি করা মাছ কিনা তা জানা সম্ভব নয়।

তবে পুকুরটি আপোষমতে তাদের বলে দাবি করে পলাশ হোসেন মাছ ধরে মনিরুল মেম্বরের সেটে বিক্রির কথা স্বীকার করেন। বলে দাবি করেন মনিরুল ইসলাম।

সাতক্ষীরা সদর থানার সহকারি উপপরিদর্শক সুভাষ শিকদার সাংবাদিকদের বলেন, পলাশ হোসেনের অভিযোগের ভিত্তিতে ছফুরা ও তার ছেলেদের বৃহষ্পতিবার থানায় আসতে বলা হয়। একইভাবে ওসি স্যারের কথা মত কুশখালি বিট অফিসারের অফিস কুশখালি ইউপি অফিস সংলগ্ন একটি অফিসে শনিবার উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। সেখানে চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল ও ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম থাকতে পারেন।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১)