মাগুরা প্রতিনিধি : সন্ত্রাসী বিপুল মন্ডল ও তার বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে  সংবাদসম্মেলন করেন মাগুরার শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের ধাউখালী গ্রামের মনিকা মন্ডল নামের এক অসহায় নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা। ওই পরিবারটি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচতে রবিবার সকাল ১১টায় শালিখা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ব্যক্তব্যে বলেন- একই গ্রামের বিপুল মন্ডল নামের এক সন্ত্রাস ও তার বাহিনীর অত্যাচারে আমাদের বসবাস করা দুস্কর হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগী মনিকা মন্ডল নামের ওই অসহায় নারী ও তার স্বামী লাল্টু কুমার মন্ডল সাংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

মনিকা মন্ডল কান্নার স্বরে বলেন বিপুল মন্ডলের কাছ থেকে গত ৮ বছর আগে নগদ ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ১১ শতক জমি ক্রয় করেছিলো আমার স্বামী লাল্টু কুমার মন্ডল। জমি ক্রয় করার পর থেকে আমরা সুখেই দিন যাপন করছিলাম। হঠাৎ করে বিপুল মন্ডল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী মিলে ওই জমি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য নানা ভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, মারধোর, ঘরের উপর ইট পাটকেল ছোড়াসহ আমাকে এবং আমার ছেলে অপূর্ব মন্ডলকে হত্যা করার হুমকী দেয়। শুধু তাই নয় একাধিকবার আমাকেসহ আমার স্বামী ও সন্তানকে অপহরণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বিষয়টা নিয়ে আমার ছেলে অপূর্ব মন্ডল শালিখা থানায় একটি জিডিও করেছে। জিডি নং ৭২/২০। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য শালিস সহ থানা পুলিশেও অভিযোগ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় কয়েকবার আমাদের একমাত্র সন্তান অপূর্ব মন্ডলকে মোবাইল ফোনে হত্যা করার হুমকীও দিয়েছে ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। গত ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখ রাতে বিপুল ও তার লোকজন স্বশস্ত্র অবস্থায় আমার বাড়ির উপর এসে আমাকেসহ আমার স্বামী ও সন্তানকে অপহরন করার চেষ্টা করে। এসময় আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। বিষয়টি আমার ভাই দুলাল বিশ্বাসকে জানালে সে বিপুলের সাথে কথা বলে এবং সুরাহার আশ্বাস দেয় ।

পরদিন সন্ধ্যায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে মিমাংসার জন্য আমাদেরকে বিপুলের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।সেখানে উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিগন বিপুলের ভাতিজা সুব্রত ও শুভ মন্ডলের সাথে আমার স্বামীর হাতে হাত মিলিয়ে দিয়ে বলেন এমন ঘটনা আর ঘটবেনা। সালিশ মিমাংসা শেষে আমার স্বামী লাল্টু কুমার মন্ডলকে হত্যা করার উদ্যেশ্যে বিপুল মন্ডল ও তার বাহিনী সুব্রত মন্ডল ,শুভ মন্ডলসহ আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী পিছন থেকে এসে লাটি ও রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে আমার স্বামী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।এমন সময় আমাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আমাদের রক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

দীর্ঘ দিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকার পর, আমার স্বামীর পিছনে কয়েক লক্ষ টাকাও খরচ হয়। এখন পর্যন্ত আমার স্বামী অনেকটাই স্মৃতি শক্তি হারানো রয়েছে। সন্ত্রাসীদের অত্যাচার নির্যাতন দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোন লাভ হয়নি। মনিকা মন্ডল কান্নায় ভেঙে পড়ে আরো বলেন আমাকে, আমার স্বামীকে ও আমাদের এক মাত্র সন্তানকে আপনারা বাঁচান। আমরা বাঁচতে চাই।

(ডিসি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১)