রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিজ্ঞ বিচারক ফারহানা সুলতানা  প্রতারণামুলক অর্থ আত্মসাতের মামলায় আল-হামীম পাবলিক লিমিটেড নামে একটি ভুঁইফোঁড় কোম্পানি সাবেক ৩ জেলা কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আল-হামীমের সাবেক কর্মকতারা হলেন- মাওলানা আনিছুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম ও মাওলানা আছয়াদুর রহমান আপেল। 

আদালত সুত্রে জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারি কোম্পানির কর্মী ওমর ফারুক আল হামীমের এই ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, আকর্ষণীয় মুনাফা দেয়ার কথা বলে আল হামীম কোম্পানির নামে গ্রাহকের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা আদায় করে। পরে মেয়াদ শেষে বিভিন্ন স্কীমে সদস্যদের জমাকৃত টাকার লভ্যাংশ না দিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তারা তা প্রতারণামুলক ভাবে আত্মসাত করেছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আদালত থেকে অস্থায়ী জামিন নেন ওই ৩ সাবেক কর্মকর্তা।

২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার মামলার ধার্য তারিখে আসামীরা আদালতে উপস্থিত হলে তাদের জামিন বাতিল করে আসামীদের জেলহাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন বিচারক।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামীরা লাখ লাখ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে অনেক দম্পতির সংসারও ভেঙে গেছে। অনেকে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এ কারণে আসামীদের জামিন বাতিলের আবেদন করা হয়। আদালত বিষয় বিবেচনায় জামিন বর্ধিত না করে আসামীদের জেলহাজতে নেয়ার আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ৩ হাজার গ্রাহকের ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা নিয়ে হাওয়া হয়েছে আল হামীম পাবলিক লিমিটেডের এমডি এনামুলক বীর কহিনুর ও তারসহ যোগীরা। এই কোম্পানি কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় চারটি ক্যাটাগরিতে সদস্য সংগ্রহ করে। কাগজ পত্রে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক ব্যবসা পরিচালনা করার কথা বলা হলেও দ্বিগুণ লাভের কথা বলে প্রলুব্ধ করা হয় সাধারণ মানুষকে। কোম্পানি হাওয়া হয়ে যাওয়ার পরেও সাবেক কর্মকর্তারা নানান কৌশলে ভুঁই ফোঁড় কোম্পানি খুলে জারি রেখেছেন প্রতারণা।

এ ব্যাপারে অভিযোগ উঠলে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম গত ৬ জানুয়ারি এই প্রতারণার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেদেন। তদন্ত কমিটিকে ঘটনা তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার সময় সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যুব উন্নয়নের উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এবং সমাজসেবা কর্মকর্তাকে এ তদন্ত দায়িত্ব দেয়া হয়।

(পিএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১)