সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : কাপাসিয়া উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদী আর ব্রাহ্মপুত্র নদের সঙ্গম স্থলে জেগেউঠা ধাধার চর সবসময়ই কৃষিজাত খাদ্য দ্রব্য উৎপাদনের উর্বর ভূমি। বিশেষ করে পেঁয়াজ উৎপাদনের অনন্য ভূমি এই ধাধার চর। পেঁয়াজ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে অন্যতম। তরকারি স্বাদের জন্য পেঁয়াজের বিকল্প শুধু পেঁয়াজ। ধাধার চরের পেঁয়াজের ঝাঁজ ও স্বাদে রয়েছে ভিন্নতা। এ চরের পেঁয়াজ কৃষকের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি ও হয়। পেঁয়াজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চরের অনেক কৃষক। 

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দূর্গাপরে ইউনিয়নের ধাধার চরটি অবস্থিত। পেঁয়াজ ছাড়া ও এই চরে হরেক রকম সবজি চাষে ও কুষকরা সাফল্যের মুখ দেখছে। নারা রকম সবজি ফলনের কারণে প্রতিদিনই উদসুক সারাধরণ মানুষ চরে ভির জমায়।

অভিজ্ঞমহল বলেছেন, বাংলাদেশের পেঁয়াজের মোট চাহিদার প্রায় ৫৭ শতাংশ দেশে উৎপাদিত হয়। বাকীটা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

বাংলাদেশের কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ৩০ লাখ টনের মতো। ২০২০ সালে বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার টন। এই উৎপাদন থেকে গড়ে ২৫-৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন গিয়ে দাড়ায় ১৮ থেকে ১৯ লাখ টনে। দেশের বাকি চাহিদা পূরণ করতে প্রায় ১১ লাখ টন পেঁয়াজ প্রতিবছর আমাদের আমদানি করতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করতে হলে দেশেই অন্তত ৩৫ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে হবে। পেঁয়াজ উৎপাদনে ধাধার চরের জমি, শীতকালে শীতলক্ষ্যা নদী আর ব্রাহ্মপুত্র নদের শুকনো তীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ধাধার চরের পেঁয়াজ চাষী খায়রুল বাসার, লাকিব সরকার, তারা মিয়া, নয়ন মিয়া, শামসুদ্দিন, তুহিন ভূইয়া জানান, পেঁয়াজের ভালো ও উন্নত বীজের অভাব রয়েছে। বীজের দাম অনেক বেশি। পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই বলে তারা জানিয়েছেন।

তাছাড়া, পেঁয়াজের দাম একেক সময় একেক রকম থাকে। অনেক সময় অতিরিক্ত দামের কারণে কোন কোন কৃষক সংসারের প্রয়োজনে বীজ বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এসব সমস্যা সমাধান হলে কৃষক পেঁয়াজ চাষ করতে উৎসাহিত হবে। কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের কোন কর্মকতা ধাদার চরের পিয়াজ চাষের কোন তথ্য দিতে পারেনি।

(এসকেডি/এসপি/মার্চ ০১, ২০২১)