স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ক্ষমতা হস্তান্তর স্বাভাবিক হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) নির্বাচন কমিশন ভবনে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

ইসি মাহবুব বলেন, ‘একথা ধ্রুব সত্য যে, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রে উত্তরণের একমাত্র পথ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশীদারমূলক ও গ্রহণযােগ্য না হলে ক্ষমতার হস্তান্তর স্বাভাবিক হতে পারে না। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযােগ্য না হলে দেশের স্থিতিশীলতা, সামাজিক অস্থিরতা ও ব্যক্তির নৈরাজ্য বৃদ্ধি পায়।’

তিনি বলেন, ‘নৈরাজ্যপ্রবণতা কোনাে গণতান্ত্রিক দেশের জন্য মােটেই কাম্য নয়। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্খা রূপদানের জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর সাংবিধানিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে না পারলে আমরা গণতন্ত্র অস্তাচলে পাঠানাের দায়ে অভিযুক্ত।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘তৃতীয় জাতীয় ভােটার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “বয়স যদি আঠারাে হয় — ভােটার হতে দেরি নয়”। আমার কাছে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দবন্ধ বলে মনে হয়। যিনি আঠারাে বছরে সদ্য পদার্পণ করলেন, তিনি দেশের একজন পরিপূর্ণ নাগরিক হিসেবে অভিষিক্ত হলেন। স্বভাবতই দেশ সম্পর্কে আগ্রহ, উপলব্ধি ও উৎসাহ তার মনে নতুনভাবে রেখাপাত করবে। ভােটার হওয়ার মাধ্যমে তিনি যে স্মার্ট কার্ডটি পাবেন, তা জীবনব্যাপী তার আত্মপরিচয়ের স্মারক। এ জন্য আজ নতুন ভােটারদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা দেশব্যাপী পৌরসভা নির্বাচনের প্রায় শেষ পর্যায়ে আছি। আগামী এপ্রিল মাস থেকে ধাপে ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় নির্বাচনগুলাের গতিপ্রকৃতি দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও ভারসাম্য রক্ষিত হওয়ার প্রয়ােজন ছিল, তা হচ্ছে না। এককেন্দ্রীয় নির্বাচনে স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই, নির্বাচনে মনােনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’

মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্র দখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন একটা অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংঘঠিত এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা হলেও অসংখ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা দুর্ঘটনা মিলে এক ধরনের অবিছিন্নতা তৈরি হয়, যা নির্বাচনের অনুসঙ্গ হিসেবে রূপ লাভ করে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে এখন যে ধরণের নির্বাচন হচ্ছে, তার মান আরও নিম্নগামী হওয়ার আশংকা রয়েছে।’

(ওএস/এসপি/মার্চ ০২, ২০২১)