ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : অবৈধ ভাবে প্রায় ৬ কোটি টাকা উপার্জন মামলার আসামী কালীগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামলীগ নেতা নাছির উদ্দীন চৌধুরী এবার ত্রাণের ৮৪ বস্তা শুকনা খাবার নিজের গোডাউনে রেখে চরম সেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে শনিবার (৬ মার্চ) দিনভর আলোচনা সমালোচনা চলার পর একজন জন প্রতিনিধির হস্তক্ষেপে সিলগালা গোডাউন দুপুরে খুলে দিতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন।

ঝিনাইদহ জেলা প্রসাশনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর এরফানুল হক চৌধুরী গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীনের নিজ গ্রাম পুকুরিয়ার একটি গোডাউন থেকে ৮৪ বস্তা শুকনা খাবার উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, এ সব মালামাল উদ্ধারের পর জানা যায় সেগুলো স্থানীয় এমপিকে দিয়ে ৭ মার্চ বিতরণের জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু এমপি ঢাকায় থাকার করণে সেগুলো ওই গোডাউনে রাখা হয়। তবে সরকারী জিনিস চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত হেফাজতে রাখা বৈধ কিনা তা নিয়ে প্রশাসনের কেও মুখ খোলেন নি।

জেলা প্রশাসন ও কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি সুত্র জানায়, গোপন সুত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পুকুরিয়া গ্রামে নাছির চেয়ারম্যানের গোডাউন থেকে ৮৪ বস্তা শুকনা খাবারের প্যাকেট জব্দ করে। সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয় গোডাউনটি। নড়েচড়ে বসে দুদকের দায়ের করা মামলার আসামী দলিল লেখক থেকে চেয়ারম্যান হওয়া নাছির উদ্দীন। অনেকেই সে সময় আশংকা করছিল উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে ভিজিডির চাল থাকতে পারে। প্রথম দিকে প্রশাসনের কেও কেও স্বীকারও করে বসেন। পরে সংশোধন করা হয়।

শনিবার সকাল থেকে যতই সময় গড়াই ততই বিষয়টি খোলসা হতে থাকে। দুপুরের দিকে রাজনৈতিক চাপে গোডাউনের সিলগালা খুলে দেওয়া হয়। সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শাফায়েত হোসেন বলেন সরকারী ভাবে যা কিছু পাওয়া গেছে সবই বিতরণ করা হয়েছে। উদ্ধার ও জব্দকৃত এই মালামাল সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রানী সাহা জানান, শনিবার দুপুরের দিকে গোডাউন খুলে দিয়ে মাষ্টার রোলের কাগজ তলব করা হয়েছে। আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিষয়টি যাচাই বাছায় করবো।

তিনি বলেন, সরকারী সম্পদ কেন চেয়ারম্যান তার নিজ হেফাজতে রেখেছিলেন তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন।

সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন জানান, গত বুধবার উত্তোলন করে এগুলো বিতরণের জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু আমার আব্বার ইন্তেকাল জনিত কারণে বিতরণ করতে পারিনি।

তিনি জানান, এই প্যাকেটে কিছু চাল, ডাল, নুডুলস, চিড়া, মুড়ি ও তেল আছে। তিনি বলেন পুকুরিয়া গ্রামে একটি এতিমখানার ভবনে শুকনা খাবারের প্যাকেটগুলো রাখা হয়েছিল। সেটি তার গোডাউন নয়। সরকারী জিনিস কেন ব্যক্তিগত হেফাজতে রাখলেন এমন প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেননি চেয়ারম্যান নাছির।

(একে/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২১)