স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী ও শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক বহুল আলোচিত তুফান সরকারের জামিন বাতিল করেছে আদালত। রবিবার (৭ মার্চ) বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক একেএম ফজলুল হক জামিন বাতিলের আদেশ দেন। একইদিন আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তুফান সরকারের সহযোগী আতিকুর রহমানেরও জামিন বাতিল করেন আদালত।

একই আদালত গত ১৭ জানুয়ারি তুফান সরকারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন। ইতিপূর্বে ধর্ষিতা কিশোরী এবং তার মাকে নির্যাতন, তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার পৃথক মামলায়ও তিনি জামিন পেয়েছেন। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। অাসামী তুফান সরকার বহুল আলোচিত মতিন সরকারের ছোট ভাই।

বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নরেশ মুখার্জী জানান, কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় রবিবার (৭ মার্চ) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য্য ছিল। এদিন সকল আসামির আদালতে হাজির থাকার কথা। কিন্তু দুদকের একটি মামলায় তুফান সরকার কারাগারে আটক রয়েছেন। তাকে আদালতে আনতে হলে নিয়ম অনুযায়ী আসামি পক্ষের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (পি/ডব্লিউ) চাওয়ার কথা। কিন্তু তুফান সরকারের আইনজীবী আব্দুল মান্নাফ তাহা না করে টাইম পিটিশন (সময়ের আবেদন) দিলে আদালত তা নাকচ করে জামিন বাতিল করেন। একই সঙ্গে অপর আসামি আতিকুর রহমান অনুপস্থিত থাকায় তারও জামিন বাতিল করে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়।

জানা যায়, ভালো কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার কথা বলে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই একছাত্রীকে কৌশলে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার। ঘটনার দশদিনের মাথায় ওই কলেজ ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। সেই সময় ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। উক্ত ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৯ জুলাই ২০১৭ বগুড়া সদর থানায় তুফান সরকারসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ মামলার প্রধান আসামি তুফান সরকারসহ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী সময়ে তুফান সরকারকে শ্রমিক লীগের অাহ্বায়ক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।

তদন্ত শেষে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় তুফান সরকারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ। সেইসঙ্গে মা ও মেয়েকে নির্যাতনসহ ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় তুফান সরকারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশীট দেওয়া হয়। মামলা দু’টির মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ধর্ষণের মামলায় চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি জামিন পান তুফান সরকার। বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মা-মেয়েকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করা সংক্রান্ত নির্যাতনের মামলায় তুফান সরকার আগেই জামিন পেয়েছেন।

(আর/এসপি/মার্চ ০৮, ২০২১)