স্টাফ রিপোর্টার : দায়িত্ব পালনের সময় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ বা প্রভাব ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ। তার কাছে একজন মন্ত্রী এসেছিলেন। কিন্তু সেটা তদবিরের জন্য নয় বলে জানান তিনি।

সোমবার (৮ মার্চ) কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে বিদায়ী অনুষ্ঠান ও ‘গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়’ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমার কাছে কোনো মন্ত্রী বা এমপি কখনও চাপ প্রয়োগ করেননি। শুধু একদিন একজন মন্ত্রী আমার কাছে এসেছিলেন; তিনি আমার বন্ধু হন। তিনি এসেছিলেন এক কাপ চা খেতে, কোনো তদবির করতে আসেননি। কোনো মন্ত্রী মহোদয় আমার কাছে আসেননি। কোনো মন্ত্রী মহোদয় আমার কাছে ফোন দিয়ে এমন কিছু বলেননি। দ্যর্থহীনভাবে বলতে পারি আমার ওপর কোনো চাপ ছিল না।’

দুদক সব ক্ষেত্রে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে আমরা সবাইকে একটি বার্তা দিতে পেরেছি, যে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। অনেক ক্ষমতাধর মানুষকে দুদকের বারান্দায় আসতে হয়েছে। কেউ অন্যায় করে রেহাই পাননি। এই বার্তাটি আমরা পৌঁছাতে পেরেছি।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে। আমি তৃপ্ত হতে পারিনি। জনগণের আস্থার প্রতিদান সেভাবে দিতে পারিনি।’

কাজ করতে গিয়ে দুদকের সবচেয়ে দুর্বলতা কোন জায়গায় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিদায়ী চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানে কোয়ালিটি সম্পন্ন লোকবলের অভাব। কমিশনের যে ধরনের লোক দরকার তেমন লোক নেই। যারা আছে তাদের আরও বেশি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেত হবে।’

দুদক কর্মকর্তাদের ঘুষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষ নিয়ে কাজ করি, মানুষকে ডিল করা খুব সহজ কাজ নয়। মানুষ লোভ-লালসার ঊর্ধ্বেও নয়। যারা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

২০১৬ সালের ১০ মার্চ দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান ইকবাল মাহমুদ। দুদকের চতুর্থ চেয়ারম্যান হিসেবে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

মেয়াদ শেষ হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি অন্যদের মতো বলব না যে, দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে চলে যাচ্ছি। আমি বলব, এক বসন্তে হাসিমুখে এসেছিলাম, আরেক বসন্তে হাসিমুখে চলে যাচ্ছি।’

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৮, ২০২১)