রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একই এতিমখানায় আকস্মিকভাবে ১৬জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, গত সোমবার রাতে উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ছিনাই গেট এলাকার নেছাব উদ্দিন এতিমালয় ও ছালমা খাতুন হেফজুল কোরান একাডেমী মাদরাসায়।

এতিমখানা ওএলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ওই মাদরাসায় ৫২জন শিক্ষার্থী হেফজুল কোরান শিক্ষা গ্রহণ করছিল। ঘটনারদিন ৮মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে এক শিক্ষার্থী প্রসাব করে পায়জামা ভিজে ফেলে। এসময় তার পেট ও মাথা ব্যথা শুরু হয়। ওই শিক্ষার্থী কিছু বুঝে উঠার আগেই অপর শিক্ষার্থীরা তার অসুস্থ হয়ে পড়ার বিয়ষটি লক্ষ্য করে ওই মাদরাসার শিক্ষককে অবগত করে। কিছু বুঝে উঠার আগেই এক সঙ্গে আরো ৪/৫জন শিক্ষার্থী একই লক্ষণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও অসুস্থ হয়। বিষয়টি বেগতিক দেখে ওই মাদরাসার শিক্ষক ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম নুরুকে জানালে তিনি রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খবর দেন।

খবর পেয়ে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ আসাদুজ্জামান জুয়েলও তার লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই রাতেই অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা হলো মোঃ নবী মিয়ার ছেলে মামুন(১২), মৃত শাহের আলীর ছেলে সজীব হোসেন(১০), ছকিয়ত আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম(১৩), মৃত জব্বার আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম(১২), হযরত আলীর ছেলে নাহিদ ইসলাম(১০), ইয়াকুব আলীর ছেলে হৃদয় হাসান(৯), রশিদুল ইসলামের ছেলে জুলফিকার রহমান(১৩), রফিকুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম(১৩), শাকিল আহম্মেদের ছেলে হৃদয় আহম্মেদ(১০), ছকিমুদ্দিনের ছেলে সৌরভ(১২), শফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা(১২), আশরাফ আলীর ছেলে জাহিদ হাসান(১৩), সাখয়াত হোসেনের ছেলে তানভীর রহমান(১৩),মিজানুর রহমানের ছেলে জিহাদ হাসান (১০) এবং কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি মোন্নাফ আলীর ছেলে লাবিব(১০) ও এরশাদুলের ছেলে নাইম(১২)।

ওই মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোঃ এরশাদুল্ল্যা বলেন, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীরা দুপুরের খাবার খায়। এতে আলু ভাজিসহ মুশুর-ঠাকুরের মিশ্রনে ডাল ভাত ছিল। মাগরিবের নামাজের পর এক শিক্ষার্থী প্রসাব করে পায়জামা ভিজে ফেলে। অপর শিক্ষার্থী তা দেখে আমাকে জানালে আমি তাকে ডাক দেই। এসময় আরো ৪/৫জন শিক্ষার্থীরও প্রসাবে পায়জামা ভিজে যায়। তারা পেট ও মাথা ব্যথা বলে জানায়। অসুস্থ হয়ে পরার খবরটি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম নুরুকে জানালে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক গিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে। এর মধ্যে দু’জনকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আরো বলেন, ৫মাস আগে দূর্গাপুর এতিমখানা থেকে রাকিবুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি হলে তার এ রোগ দেখা দেয়। ৪/৫দিন আগে একই রোগে জুলফিকার আলী নামের শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়।

মঙ্গলবার এ ব্যাপারে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, এটি আসলে মাস সাইকোজেনিক ইলনেস। যেটাকে গণহিষ্টিরিয়া বলে। এ রোগ ততো মারাত্মক নয়। অসুস্থ্য শিক্ষার্থীরা সুস্থ্য হয়ে উঠছে। তাদের ওইদিন দুপুরের খাবারের সেম্পল নিয়ে আসা হয়েছে।

(পিএস/এসপি/মার্চ ০৯, ২০২১)