স্টাফ রিপোর্টার : মাত্র কয়েক দিনপর নববধূকে তুলে আনতে বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের দামিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শাহাদাৎ হোসেনের ছেলে রাজন আহমদ (৩২)। পরিবার থেকেও নেয়া হচ্ছিল বিয়ের সামগ্রীক প্রস্তুতি। তার আগেই রাজন নিখোঁজ। এ নিয়ে নানা মন্তব্য ও সন্ধেহের সৃষ্টি হয়েছে।

বিয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার নিকট আত্মীয়ের পাঠানো টাকা উত্তোলন করতে যান মৌলভীবাজার শহরের ঢাকা-সিলেট মহা সড়কের পাশে অবস্থিত আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে। সেখান থেকে টাকা উত্তোলন করেই বাড়িতে ফোন দিয়ে জানান, টাকা উত্তোলন শেষ এখন তিনি বাড়ি ফিরছেন। এর পর থেকে রাজনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে পড়েন।

নিখোঁজ রাজনের বড় ভাই ও কনকপুর ইউপির ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য শিব্বির আহমদ জানান, সোমবার ১৫ মার্চ সকাল দূপুর ১২ টার দিকে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছে বলে মুঠোফেনে জানায়। জানানোর পরপরই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আল আরাফাহ ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখার প্রিন্সিপ্যাল অফিসার মুহিবুর রহমান জানান, আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে সত্য তবে ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর বাহিরে কী হয়েছে সেটা জানি না। পরে ঘটনাটি তার আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে জানতে পারি।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আগামী ২১ মার্চ রাজনের বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। বিয়ে ও নব বধূকে ঘরে তুলে আনতে শুরু হয় প্রস্তুতি। সোমবার আল আরাফাহ ব্যাংক মারফত আত্মীয়ের পাঠানো টাকা তুলতে যান তিনি। সেখান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা বুঝে পেয়ে যথারীতি নিজের ব্যবহৃত ফোন থেকে টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ভাইকে। এর পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় যায় বলে জানান রাজনের ছোট ভাই শিপন আহমদ।

এদিকে ঘটনার একদিন অতিবাহিত হলেও এ-রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাজনের কোন খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তার ভাই।

কনকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান চৌধুরী রেজা জানান,এরকম ঘটনা তো আগে কখনো শুনিনি, রাজন ভালো ছেলে। তার নিজের বিয়ের খরচের কিছু টাকা বিদেশ থেকে আসে। সে টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়ি ফেরার কথা। তবে এবিষয়ে ইতোমধ্যে পুলিশ এবং র‌্যাবকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখছি, আশা করছি দ্রুত পেয়ে যাব।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,আমরা বিষয়টি অনুষন্ধান করে খোঁজ খবর নিচ্ছি, তবে এখনো কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

(একে/এসপি/মার্চ ১৬, ২০২১)