মানিক সরকার মানিক, রংপুর : সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরতর আহত কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মিন্টুকে উন্তত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টায় এ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। 

এর আগে মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন ও পায়ের রগ কাটা অবস্থায় তাকে কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর মেডিকেল কলেহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা দ্রুততার সাথে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্ন চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাতে থাকা কলেজ শিক্ষক আতাউর রহমান মিন্টু তার উপর হামলার ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিপ্রকাশ বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, তিনিসহ আরও দু’জন মোটর সাইকেলে কওে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির একটা প্রজেক্ট দেখতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে ছিনাই ইউনিয়নের আর কে রোডের পাশে পালপাড়া এলাকায় হাতকাটা গ্রুপের বাঁধনসহ ৮/৯জন আমার পথরোধ করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতারি লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। আমার সাথে থাকা দু’জন ধারালো অস্ত্র দেখে পালিয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীদের হাত পা ধওে আকুতি মিনতি করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তার হাত পা লক্ষ্য কওে রামদা ও চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে। এতে তার ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাম হাতের অবস্থাও ভাল না। দুই পায়ের রগও কেটে দিয়েছে বলে জানান রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

তিনি জানান, হামলাকারীরা ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাঁধন গ্রুপের সদস্য। তিনি আরও বলেন, তিনি সাবেক এমপি জাফর গ্রুপের সাথে কাজ করেন। ৭/৮মাস আগে প্রতিপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানের গ্রুপের কর্মী বাঁধনকে কে বা কারা মেরে আহহত করে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষরা তার উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ মিন্টুর। তিনি জানান, ওদেও সাথে কোন রাজনৈতিক কোন্দল কিংবা বিরোধিতা নেই। তারা সকলেই হাতকাটা বাহিনীর সদস্য।

মিন্টু কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখার আহবায়ক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তার বাবা ফুলবাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। ছেলের উপর হামলার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলে পঙ্গু হয়ে গেল , আমি এর বিচার চাই।

রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপন ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, রোগি মরণাপন্ন অবস্থায় এখানে এসেছিল। তার দুই পায়ের রগ হাটুর উপরের রগগুলো কাটা ছিল। তার রক্তচাপও অনেক কম ছিল। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে শংকামুক্ত করা হয়। তবে তার ডান হাতটি নেই। এজন্যই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেই। সেখানে প্লাষ্টিক সার্জন আছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আহত মিন্টুকে গুরতর অবস্থায় উদ্ধার করে নেয়া পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আসামীদেও গ্রেফতাওে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।

(এম/এসপি/মার্চ ১৭, ২০২১)