স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গাজীপুরে মহিলা, শিশু ও কিশোরী হেফাজতীদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে ১৪ হেফাজতী পালিয়ে গেছে। বুধবার গভীর রাতে তারা ভবনের তিনতলার জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ওড়না দিয়ে রশি বানিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে পালিয়ে যাওয়া সাতজন হেফাজতীকে আটক করা গেলেও অপর সাত জনকে আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। 

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ ছায়েদুল ইসলাম, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রামচন্দ্র দাস এবং সকালে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাকির হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের স্টোর কিপার আব্দুর রহমান মোল্লা বাদি হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পালিয়ে যাওয়া হেফাজতীরা হচ্ছে- লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানার মাঠগ্রাম এলাকার মিলন মিয়ার মেয়ে মিম আক্তার (১৭), পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার দেউলি এলাকার সৈয়দ মিল্টনের মেয়ে মলি আক্তার (১৭), নরসিংদীর শিবপুর থানার ধানুয়া এলাকার শাহ আলমের মেয়ে মনিরা (১৫), মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার বড় নওয়াপাড়া এলাকার বর্না আক্তার নিঝুম (১৫), আশুলিয়া থানা সদর এলাকার ওমর ফারুকের মেয়ে ফাহমিদা আক্তার রিয়া (১৬), নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজ বাতান পাড়া মাদ্রাসা রোড কবির মিয়ার মেয়ে তাসলিমা (১৫) ও একই জেলার বন্দর থানার বাঘবাড়ি এলাকার আব্দুর রশিদের মেয়ে জামিলা খাতুন সুইটি (১৭)।

পালানোর পর উদ্ধার হওয়া হেফাজতীরা হলো- নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানার ইলমদি গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে লামিয়া (১৮), ঠিকানা না জানা আজিজুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া (১৫), নরসিংদী পলাশ থানার ঘোড়াশাল এলাকার মাহমুদা আক্তার তুলি, বাক প্রতিবন্ধী সাবানা (১৭), জেসমিন (১৮), লুৎফুন্নাহার (২০) ও সুরমা (১৭)।

মহিলা, শিশু ও কিশোরী হেফাজতীদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে ওই নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে তৃতীয় তলায় হেফাজতে থাকা ২৮ জন হেফাজতীর মধ্যে ১৪ জন হেফাজতী ভবনের দক্ষিণ পাশের জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ওড়না দিয়ে রশি বানিয়ে প্রায় ২৫ ফুট দেয়াল টপকে তারা পালিয়ে যায়। টের পেয়ে আবাসন কেন্দ্র থেকে পুলিশকে জানানো হলে সদর মেট্রো থানার পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে ৭ জনকে আটক করেছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, এখানে বাবা-মায়ের অমতে যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় বা বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যায় তাদের একটি অংশ এখানে থাকে। এখানে যারা থাকে তাদের চিন্তা ভাবনা থাকে যে তারা কিভাবে পালিয়ে যাবে। যারা পালিয়ে গেছে তাদের মধ্যে এরকম সাত জন ছিল। যে সাতজনকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে চারজন বাক প্রতিবন্ধ¦ী ও তিনজন ভবঘুরে ছিল।

তিনি আরো জানান, এখানে জনবল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে আর খাবারের মানটিও বাড়াতে হবে। আজকে মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করা হবে যেন জনবল বাড়ানো হয়। এছাড়া এ কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য নারী আনসার মোতায়েন করা যায় কিনা সেটাও চিন্তা করা হচ্ছে।

গাজীপুর মেটোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) জাকির হাসান জানান, সেফ হোম থেকে নিবাসী পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের আটকের জন্য অভিযান চলছে।

(এস/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২১)