মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের উত্তর কলাগাছিয়া গ্রামের নতুন প্রণবমঠের সেবায়েত টমেন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে এক কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে পাওয়া গেছে। পরিবারের অভিযোগ ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় কিশোরীর মা শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করেছেন।

স্থানীয়, পারিবারিক ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার উপেন্দ্র ওরফে পাটানর ত্রিপুরার ছেলে টমেন ত্রিপুরা। সে মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের উত্তর কলাগাছিয়া গ্রামের নতুন প্রণবমঠের মন্টু মহারাজের সেবায়েত হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কাজের স্বার্থে সে ঐ প্রণবমঠের পাশে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন।

প্রণবমঠের পাশে ঐ কিশোরীর বাড়ি হওয়ায় টমেন ত্রিপুরার যাতায়াত ছিলো। টমেন ত্রিপুরার রান্নার লোক ছুটিতে থাকায় ঐ কিশোরীর মাকে রান্না করে দেয়ার কথা বলেন। তখন ঐ কিশোরী টমেন ত্রিপুরার রান্না করে দেন।

গত ফেব্রুয়ারী মাসের ৫ তারিখে ঐ কিশোরী রান্না করতে গেলে টমেন ত্রিপুরা জোর করে কিশোরীকে তার নিজের থাকার ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য এবং কাউকে জানালে কিশোরী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয় ঐ ধর্ষক টমেন ত্রিপুরা।

ঘটনার পর কিশোরী তার পরিবারকে ধর্ষণের ঘটনা জানান। এই ঘটনার এলাকায় জানাজানি হবার পর ধর্ষক টমেন ত্রিপুরা পালিয়ে গেছে।

কিশোরীর মা জানান, আমার স্বামীর মানসিক সমস্যা আছে। তাছাড়া আমরা গরীব মানুষ। তাই প্রথমে মামলা করতে সাহস পাইনি। এই ঘটনা নতুন প্রণবমঠের দায়িত্বে থাকা মন্টু মহারাজকে জানাই। পরে ইউপি সদস্য অমল ভক্তকে জানাই। তারা সালিশের মাধ্যমে বিচারের আশ্বাস দিলেও কোন লাভ হয়নি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কোন বিচার না পেয়ে শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করেছি। মামলা পর থেকে আমাদের এলাকার প্রভাবশালীরা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জানিনা আমি এর বিচার পাবো কিনা। তাছাড়া ধর্ষণের ঘটনার পর আমার মেয়ে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছে। আমি দ্রুত ঐ টমেন ত্রিপুরার গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী জানাই।

নতুন প্রণবমঠের একজন ভক্ত নাদিম বৈদ্য বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। সত্য মিথ্যা জানিনা। অভিযুক্ত টমেন ত্রিপুরা পালিয়ে গেছে। তাকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। তাকে পাওয়া গেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা ঐ কিশোরীর পাশে আছি। তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আজ সকালে (শনিবার) এক কিশোরী এসে প্রয়োজনীয় ডাক্তারী পরীক্ষা করেছে।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

(এস/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২১)