নিউজ ডেস্ক : সম্পর্ক গড়তে যেমন সাহায্য করে তেমনই ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের ক্ষতে নুন ছিটাতেও জুড়ি নেই সোশ্যাল মিডিয়ার। সম্প্রতি এমনই তথ্য পাওয়া গেল এক সমীক্ষায়।

সম্পর্ক তৈরি হতে-না-হতে ফেসবুকে সে কথা সোচ্চারে জানানোর হিড়িক পড়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বছর হল। তা বলে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলেও কি একই অভ্যাস বজায় থাকবে?

কানাডার পশ্চিম অন্ট্যারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ববিদ অ্যানাবেল কুয়ান-হাসের মনে প্রশ্নটি উঁকি মারে। তাঁর কথায়, 'ফেসবুক-টুইটারে সম্পর্ক গড়ে ওঠা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয়। কিন্তু ভাঙা সম্পর্ক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও আগ্রহ তৈরি হয় কি?'

উত্তরের আশায় ১০৭ জন তরুণ-তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন হাসে ও তাঁর দলের সদস্যরা। বলা বাহুল্য, নবীন প্রজন্মের এই সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা সকলেই কোনও না কোনও সম্পর্ক থেকে কিছুদিন হল বেরিয়ে এসেছেন।

সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, সম্পর্ক ভাঙতে যাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন, তাঁরা তোফা থাকলেও জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে যাঁদের নষ্ট সম্পর্কের ফল ভুগতে হয়েছে, তাঁদেরই।

প্রেমে ধোঁকা খাওয়া এমন ৬২ শতাংশ মানুষই জানিয়েছেন, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার খুঁটিনাটি ফেসবুক বা টুইটারে ফাঁস করে চরম অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তাঁদের প্রাক্তন প্রেমিকরা। এর জেরে আত্মীয়-বন্ধু মহলে তাঁদের নানা অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এর ফলে নতুন করে জেগে উঠছে হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কের ক্ষত। প্রতিদিন ফিরে ফিরে প্রাক্তন জীবনসঙ্গীর প্রোফাইল ঘেঁটে পুরনো দিনের কথোপকথনের হিসেব উল্টে দেখার নেশা পেয়ে বসছে তাঁদের।

হাসের মতে, 'বেশির ভাগ মানুষই বলেন আর কোনও দিন প্রাক্তন প্রেমিকের মুখদর্শন করবেন না। তবু ফেসবুক পোস্টের জেরে তাঁরাই প্রতিদিন বিচ্ছিন্ন সঙ্গীর প্রোফাইল ঘাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। এ যেন ক্রমে এক নেশা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'

কিন্তু প্রোফাইল দেখেও কি মিলছে স্বস্তি? ছিন্ন সম্পর্কের বলি মানুষরা অধিকাংশই কিন্তু তা খুঁজে পাননি। সম্পর্ক ভেঙে দেওয়া প্রেমিক বা প্রেমিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুক ফুলিয়ে নিজের সিঙ্গল স্টেটাস জাহির করে বেড়ালেও তাঁদের প্রাক্তন সঙ্গীরা ক্রমেই ডুবে যাচ্ছেন অবসাদের অতলে।

সম্প্রতি শিকাগোয় আমেরিকান সোশিওলজিকাল অ্যাসোসিয়েশনের ১০৯তম বৈঠকে নিজের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন সমাজতত্ত্ববিদ অ্যানাবেল কুয়ান-হাসে।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ২৭, ২০১৪)