ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রাতের আঁধারে অপহরণপূর্বক এক বিধবাকে (৩৫) পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) দিবাগত মাঝরাতে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের কৌচাকৃষ্ণপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় তিন সন্তানের জননী বিধবা রাতেই পরিবারের কাছে ঘটনাটি প্রকাশ করে।

পরের দিন বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) দুপুরে তারা বৈরাগীর হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামী করে এজাহার জমা দেয়।

বৈরাগীর হাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ভুক্তভোগীকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় এনে মামলা রুজু করে এবং ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে গাইবান্ধা সদরে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পাঠায়।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ভিকটিম তার বাবার বাড়ি কৌচাকৃষ্ণপুরে অবস্থান করত।
ঘটনার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের বাহির হলে ধর্ষক হাউসীপাড়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে বাবু মিয়া (৩০) ও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫), মান্নানের ছেলে মতিয়ার, কৌচা কৃষ্ণপুর গ্রামের বাকী প্রধানের ছেলে সোহাগ (২৫)তাকে মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে। প্রথম তাকে তারা অদূরে একটি ইউক্লিপটার্স বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তারা তাকে পাশেই জিন্নাত আলী ঘাসের জমিতে নিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে মুখ ঢেকে অপরিচিত আরো তিনজন ভিকটিমকে ধর্ষণ করে।

এলাকাবাসী জানান, সাপমারা ইউনিয়নের মেরী গ্রামের মরহুম আনোয়ার হোসেন প্রায় একযুগ আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে কৌচাকৃষ্ণপুর গ্রামে। সংসার জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। ছোট সন্তানের জন্মের পরপরই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। আনোয়ারের ছোট সন্তানের বয়স বর্তমান ছয় বছর।

ভিকটিমকে তারা শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

তারা বলেন, ধর্ষক শফিকুল এ ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেয় এবং বলে, ঘটনা প্রকাশ করলে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করব।

এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৮(২) ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন তৎসহ ৯(৩) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা নম্বর ২।

বৈরাগীর হাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিলন চ্যাটার্জী জানান, ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ০২, ২০২১)