টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভা সংলগ্ন ৭ নং ওয়ার্ডের পৈত্রিক জমি কেড়ে নিতে সাজানো মামলায় আসামি করে হয়রানীর অভিযোগ ওঠেছে। সখীপুর উপজেলা সদরের আবু বকর সিদারের ছেলে বাচ্চু সিকদার(৫৫) ওই অভিযোগ করেন।

জানা যায়, সখীপুর উপজেলা সদরের উপজেলা পরিষদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা কম্পাউন্ড ও উপজেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তা সহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা স্থানীয় ‘সিকদার’ পরিবারের জমি হুকুম দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে। এর বাইরেও উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে বাচ্চু সিকদারদের আরও পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেসব জমি জবরদখল করতে স্থানীয় একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।

বাচ্চু সিকদার জানান, তাদের পৈত্রিক জমি জবরদখল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের পরিবারের সুমন সিকদার(২৪), আব্দুর রউফ মিয়া(৪৫), মো. শামছু মিয়া(৬০), শাহাদত মিয়া(৪০) ও তাকে জড়িয়ে চাঁদাদাবির মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে মামলা(নং-১৪, তাং-৩০/০৩/২০২১ইং) দায়ের করা হয়েছে এবং তার ছেলে সুমন সিকদারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়, বর্তমানে সুমন সিকদার জামিনে রয়েছেন। বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামের মৃত পলু শেখের ছেলে মো. আতাহার আলী শেখ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয় গত ২৯ মার্চ রাতে আতাহার আলী শেখের ৪৯ খতিয়ানের ১০৪ ও ১০৫ নম্বর দাগের ৫৭ শতাংশ জমি দখল করার চেষ্টা এবং বাধা দেওয়ায় বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখানো ও পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ আনা হয়।

বাচ্চু সিকদার আরও জানান, মূলত মামলায় বর্ণিত এ ধরণের কোন ঘটনাই ওইদিন ওইস্থানে ঘটেনি। আতাহার আলী শেখ ও থানা পুলিশ পরস্পর যোগসাজসে এহেন কাল্পনিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনার নেপথ্যে তাদের পৈত্রিক জমি জবরদখল করার হীন চক্রান্ত রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, সিকদার পরিবারের জমি অনেকে ক্রয় করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কেউ কেউ কিছু জমি কিনে বেশি জমি ভোগদখল করছে। পারিবারিক সম্পত্তির পরিমাপ করতে যাওয়ায় অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে। এ নিয়ে একাধিকবার ঘরোয়া সালিশি বৈঠকও হয়েছে। এসবের সাথে থানা পুলিশও জড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ জানান, পৌরসভা সংলগ্ন ভূমি ৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। গত ২৯ মার্চ রাতে বা ৩০ মার্চ ভূমি জবরদখল ও মামলায় উল্লেখিত কোন ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানেন না, কারো কাছে শুনেনও নি। ওই ধরণের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে তিনি জানতে পারতেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক জানান, ঘটনা ঘটেছে বলেই মামলা এফআইআর করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সুমন সিকদারকে আদালতে পাঠানো হয়। আসামির কাছে এক লাখ টাকা দাবি করার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) একে সাইদুল হক ভূঁইয়া জানান, ঘটনা না ঘটলে তো মামলা রেকর্ড করা হয়না। যেহেতু মামলা হয়েছে সুতরাং ঘটনা ঘটেছে।

সখীপুর পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ জানান, ওই জায়গা দীর্ঘদিন যাবত বাচ্চু সিকদাররা ভোগদকল করছে, হাল সন পর্যন্ত তাদের নামেই কাগজপত্রও রয়েছে। তারা জবরদখল করে ঘর উত্তোলনের কোন ঘটনা ওখানে ঘটেনি, চাঁদা দাবিরও কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে ওই জায়গা দাবি করে একজন আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, মামলাটি চলমান রয়েছে।

(আরকেপি/এসপি/এপ্রিল ০৩, ২০২১)