আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু’র বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর এবং বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার নামে হত দরিদ্রের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকার ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ দরিদ্র ও অসহায়দের বিভিন্নভাবে সহয়তা দিয়ে আসছেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সান্তাহার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু নিজে এবং অনুগত ইউপি মেম্বার, চৌকিদার এবং দলীয় কর্মীদের সাহায্যে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার নামে ৪০-৫০ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ভাতার নামে ৩-৫ হাজার টাকা নেওয়ার এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা৷

সরজমিন গিয়ে জানা যায়, সান্তাহার ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার হিসাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য পাইকপাড়া গ্রামের ১টি, দমদমা গ্রামের ২টি, সান্দিড়া গ্রামের ৫টি, ছাতনী ঢেকড়া গ্রামের ৬টিসহ সর্বমোট ১৪টি পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে। কিন্তু টাকা ছাড়া যে ফ্রীতে আলকাতরাও পাওয়া যায়না এমনটা বলছেন ওই সকল তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা। শুধু তাই নয় কয়েকটি গ্রামের মানুষের কাছে এই প্রকল্পের নামে বাড়ি দেওয়ার কথা বলে ৪০-৫০ হাজার টাকা নিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু। এদিকে সান্দিড়া গ্রামের মফিজ শাহ, সালমা বেওয়া, খোতেজা বেওয়া, রাজিয়া বেওয়া বিভিন্ন ভাতার নামে ৩-৫ হাজার টাকার মাধ্যমে কার্ড করে দিবেন এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ইউপি চেয়ারম্যান অবাধে এসকল ঘুষ বাণ্যিজ্য দিনের পর দিন করে আসছেন যেনো দেখার কেউ নাই। চোঁখ থাকিতে অন্ধ এমনটাই বলছেন সচেতন মহল।

খোতেজা বেওয়া বলেন, বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার জন্য ৩ হাজার টাকা চেয়ারম্যানের সহচরী চৌকিদারকে দিতে হয়েছে। কি জামানা এলোরে বাবা উঠতে বসতে লাগে টাকা।

অপরদিকে রাজ্জাক হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার একটা প্রতিবন্ধি মেয়ে আছে তাকে ঘর দিবে এমন কথা শুনে চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করি এক পর্যায় টাকার প্রসঙ্গে ৫০ হাজার টাকার কথা বললে আমি ৪৫ হাজার টাকা দেয়, তবে এখনো কোন বাড়ী পাইনি।

এদিকে হাসান ও হোসিন দুই ভাই মিলে বাড়ি পাবার আশায় টাকা ৩০ হাজার টাকা দেয়। বহুদিন চেয়ারম্যানের দুয়ারে ঘোরাঘুরির পর বলেন খাতা খুলে দেখতে হবে যদি নাম থাকে তাহলে টাকা ফেরত পাবেন, না হলে আমার কিছু করার নাই। এমন অভিযোগ করেন মেহেরুন নেছা-রফিক এবং আমেনা-সুমন দম্পতি।

সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, শত্রুতামূলক আমাকে ফাঁসনো হচ্ছে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।

আদমদীঘি নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, সরকারি কোনো অনুদান, ভাতা অথবা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে কোনোরূপ অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের সুযোগ নেই। অর্থ দাতা এবং গ্রহীতা সমান অপরাধি। অভিযোগ দাখিল হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২১)