ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, লোকসংগীত শিল্পী ও গবেষক ইন্দ্রমোহন রাজবংশী'র মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

মন্ত্রী এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

শোকবার্তায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জানান, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলা লোকসংগীত অঙ্গনে অসামান্য অবদানের কারণে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

উল্লেখ্য, লোকগানের বরেণ্য শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আজ সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর জন্ম বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে। তার পরিবারের পাঁচ পুরুষ সংগীতের সঙ্গে জড়িত। সংগীত কলেজে লোকসঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ লোকসংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৫৭ সালে ছোটদের আসরে গান করতে শুরু করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে 'চেনা অচেনা' চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করেন তিনি।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজের নাম পরিচয় গোপন করে পাকিস্তানিদের দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন কিছুদিন। পরবর্তীতে সেখান থেকে চলে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত তিনি। দেশের সংগীতাঙ্গণে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৮ সালে সংগীত বিভাগে একুশে পদক লাভ করেন খ্যাতিমান এই সংগীতশিল্পী।

গান গাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকগান সংগ্রহ করতেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। দেশের সহস্রাধিক কবির লেখা কয়েক লাখ গান সংগ্রহ করেছেন তিনি। তার স্ত্রীর নাম দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসী। তারা নিজেরাও লোকগানের সঙ্গে জড়িত।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২১)