স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর হাতিরঝিলে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় ঝিলিক আলম (২৩) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় তার স্বামী সাকিব আলম মিশু দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রবিবার (১১ এপ্রিল) দুই দফা রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে মিশু স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে আবারও দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তখন শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।

তারও আগে ৪ এপ্রিল মিশুসহ পাঁচজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস আলম আসামি মিশুর ১০ দিনের রিমান্ড এবং অপর চার আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আসামি মিশুর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপরদিকে চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া চার আসামি হলেন- ঝিলিকের শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম, শাশুড়ি সাঈদা আলম, দেবর ফাহিম আলম ও টুকটুকি।

হাতিরঝিলে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় ৩ এপ্রিল ঝিলিক আলম নামে ওই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঝিলিককে হত্যার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন তার মা তহমিনা হোসেন আসমা।

মামলার আসামিরা হলেন- নিহত ঝিলিকের স্বামী সাকিব আলম মিশু, দেবর ফাহিম আলম, শাশুড়ি সায়িদা আলম, শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম এবং বাসার ম্যানেজার আশিশ।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের প্রথম দিকে সাকিব আলম মিশুর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় নিহত ঝিলিক আলমের। পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। মিশু বাবা-মায়ের কাছে পছন্দের বিষয়টি জানালে তারা ঝিলিকের পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে বিয়েতে অমত দেন। কারণ, ঝিলিক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সাকিব আলম মিশুর পরিবার গুলশান-২-এর স্থায়ী বাসিন্দা। আর ঝিলিকের পরিবার মোহাম্মদপুরের তাজমহল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

তাই আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় সাকিবের পরিবার ‘গরিব পরিবারের মেয়ের সঙ্গে’ ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। সাকিব তাকে ছাড়া অন্য মেয়েকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন তার পরিবারকে। একপর্যায়ে ছেলের জিদের কাছে হার মানেন তারা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর মিশুদের বাড়িতেই ওঠেন ঝিলিক। কয়েক মাস তারা ভালোই ছিলেন। ২০২০ সালের শুরুর দিক থেকে শুরু হয় অশান্তি।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১১, ২০২১)