জসিম উদ্দিন জুয়েল, টঙ্গী (গাজীপুর) : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ড টঙ্গী আউচপাড়া নিবাসী মোঃ সাব্বির হোসেন (২৫) সাবেক কমিশনার সম্পর্কে সংবাদকর্মীদের বলেন, আমাদের ভোগ দখলকৃত পৈতৃক জমির অংশকে মোঃ আবুল হোসেন, আয়শা আক্তার, নুরুন্নাহার, মোঃ জুয়েল, সোহেল, বাবুসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দখল করার চেষ্টা করে গুম খুনের হুমকি দেয়। এই বিষয়েবিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় একটি পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। 

বিজ্ঞ আদালত নালিশি সম্পত্তিতে শান্তি-শৃখলা বজায় রাখতে টঙ্গী পশ্চিম থানা ও সহকারি কমিশনার ভূমি টঙ্গী অঞ্চলকে নির্দেশ প্রদান করলে, গত ১২ই মার্চ টঙ্গী পশ্চিম থানা উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে নোটিশ প্রদান করেন। সাব্বির সংবাদকর্মীদের বলেন, আবুল হোসেন কমিশনার থাকাকালীন চাঁদাবাজী করতো, রসুলবাগ নিবাসী মুক্তিযোদ্ধার জমির ভিতর দিয়ে রাস্তা করাসহ ভূমিদস্যু, দাঙ্গাবাজ, লোভী, মসজিদের কল আত্মসাৎকারী হিসেবে তার বিচার হওয়া উচিৎ।

মোঃ আবুল হোসেন ১৯৭৪ সালে গঠিত সাবেক টঙ্গী পৌরসভার ১৯৮৩ সাল থেকে টানা চারবারের নির্বাচিত কমিশনার ছিলেন।তিনি কমিশনার প্যানেল বোর্ড এবং সালিশি বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। টঙ্গী পৌরসভা বিলুপ্ত হয়ে বর্তমান গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত হলে ৩ নং ওয়ার্ড হয় ৫৪ নং ওয়ার্ড।

সরেজমিনে দেখা যায়, দখলসহ উচ্ছেদের হুমকির কথা বললেও জায়গাটিতে মূলত দীর্ঘদিন ধরেই নির্মাণ কাজ চলমান। বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক জায়গাটিতে বাড়ি নির্মানের নিষেধাজ্ঞা নেই বলেও জানা যায়। সাব্বির এখন সনামধন্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হলি-হোমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।

এ বিষয়ে সাবেক কমিশনার বলেন, আমার দাদা মরহুম মনসুর আলির দুই পুত্রের মধ্যে একজন আমার পিতা মরহুম শুক্কুর আলী এবং অন্যজন আমার জেঠা মরহুম হাসান আলি। মরহুম জেঠার ছেলে মরহুম মনা এবং মরহুম মনার ছেলে দীর্ঘদিনের মাদকাসক্ত মোঃ নুরু। এই নুরুর ছেলে শহীদুল আর বখাটে সাব্বির শহিদুলেরই ছেলে। আমাদের জেঠার পরিবারটি তাদের সম্পদগুলো অসামাজিক কার্যকলাপ আর বিলাসিতায় বিক্রি করে করে শেষ করে। নিজেদের ভিটা ছাড়া পারিবারিক কবরাস্থানটি পর্যন্ত আমাদের কাছে বিক্রি করে দেয়। নাতির ঘরের পুতির ছেলে দীর্ঘ বছর পর কিছু কুচক্রী স্বজন ও লোকের কুপরামর্শে আমার পরিবারসহ আমার বড় ভাইয়ের ছেলে জুয়েল (ব্যবসায়ী), সোহেল (ব্যবসায়ী) ও মেধাবী ছাত্র ফাহিম হোসেন বাবুকে বলছে সন্ত্রাসী। এ সংক্রান্ত কোনো বিচার সালিশও এলাকায় হয়নি।

বায়তুল আকরাম জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ ইউনুস সাইদী বলেন, সাবেক কমিশনার আবুল হোসেনই মসজিদে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেন। এছাড়া মসজিদের সকল উন্নয়ন কাজে সর্বাগ্রে অংশ গ্রহণ করেন। এখনও তিনি আমাদের মাদ্রাসা বোর্ডের সম্মানিত সভাপতি।

এদিকে এলাকার বিশিষ্টজন, প্রতিবেশীরা বলেন, আবুল হোসেন সাহেব (৬৫) কে ভূমিদস্যু, দাঙাবাজ, লুটেরা বলা শিষ্টাচার বহির্ভূত। তার নির্বাচিত সময়ে সাব্বিরের তো জন্মই হয়নি।

ফেইসবুকে একটি অনলাইন মিডিয়ার তথ্য আবুল হোসেনের পরিবারের নজরে এলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমার বড় ছেলে দেশের স্বনামধন্য মিডিয়া এটিএন বাংলার একজন ইঞ্জিনিয়ার। ছেলে-মেয়ে সবাইকে শিক্ষিত ও সভ্য করে গড়ে তুলেছি। ২২ বছরের দীর্ঘ নির্বাচিত সময়ে রাস্তাসহ নানাবিধ সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছি।

আমি টঙ্গীর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সহকর্মী, সাংবাদিকসহ এলাকাবাসীর কাছে এমন মিথ্যাচারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর আগে মোল্লা বাড়ির সন্তান মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লার নিকট পরাজিত হয়ে তিনি অবসর জীবন বেছে নেন। তিনি টঙ্গীর সফি উদ্দিন সরকার একাডেমির সাবেক গভর্নর বডির মেম্বার, টঙ্গী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কলেজের উপদেষ্টা, ঈদগাহ মাঠের সভাপতি এবং আউচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি।

(জে/এসপি/এপ্রিল ১৩, ২০২১)