স্পোর্টস ডেস্ক : একদিকে শুরু হয়েছে মুসলমানদের ইবাদতের মাস রমজান, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক খেলা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের। ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান তো রোজা ছাড়তেই রাজি হননি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রোজার ক্লান্তিভরা শরীর নিয়েই বাবর আজমের সঙ্গে রেকর্ডগড়া এক জুটি গড়েছেন রিজওয়ান।

যে জুটিতে ভর করে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২০৪ রান হেসেখেলে তাড়া করে ৯ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। বাবর ১২২ আর রিজওয়ান খেলেন অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস।

উদ্বোধনী জুটিতেই প্রায় প্রোটিয়াদের রান তাড়া করতে ফেলতে যাচ্ছিল পাকিস্তান। দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় আউট হন বাবর। তবে ততক্ষণে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ জুটিটা হয়ে গেছে। বাবরের ১২২ রানও পাকিস্তানি কোনো ব্যাটসম্যানের এই ফরমেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।

দলের সঙ্গে নিজের এমন পারফরম্যান্সে ভীষণ তৃপ্ত অধিনায়ক বাবর। তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি ইনিংসের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এটা পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম, ভাবছিলাম যদি সুযোগ পাই লুফে নেব। ভালো লাগছে যে পেরেছি। আমি নিজের শক্তিমত্তার ওপর জোর দিয়েছিলাম, দলের প্রয়োজন অনুসারে গেম প্ল্যান বদলাই। যদি ওভারে ১০ রান করে লাগে, তবে তো তাড়াহুড়ো করা ছাড়া উপায় নেই, ঝুঁকি নিতেই হয়।’

বাবর জানালেন, তার দল সহজেই রান তাড়া করে ফেললেও রোজা রেখে এমন ব্যাটিং করা সহজ ছিল না। সঙ্গী রিজওয়ানকে এর জন্য আলাদা কৃতিত্ব দিচ্ছেন পাকিস্তান দলপতি।

বাবর বলেন, ‘রিজওয়ানের সঙ্গে জুটিটা ছিল দুর্দান্ত। সে যেভাবে খেলেছে, আমি কৃতিত্ব দিতে চাই। কারণ রোজা রেখে খেলা খুবই কঠিন। তারপরও সে ব্যাট করে গেছে এবং শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিল। এটা প্রেরণা দেয়ার মতো। পুরো দলই তাকে দেখে প্রেরণা নিয়েছে, এটা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে।’

রিজওয়ান জানালেন, তাদের সাফল্যের কোনো গোপন রহস্য ছিল না। বরং পাওয়ার প্লে’তে প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সাধারণ একটা পরিকল্পনাই শেষ পর্যন্ত সাফল্য এনে দিয়েছে।

পাকিস্তানি উইকেটরক্ষকের ভাষায়, ‘এটা আমাদের জন্য বড় জয় ছিল। ২০০ প্লাস রান তাড়া করা সবসময়ই কঠিন। কিন্তু যেভাবে আমরা শুরু করেছিলাম, তাতে কাজটা সহজ হয়ে যায়। আমাদের একটা সাধারণ পরিকল্পনা ছিল, পাওয়ার প্লে’তে জিততে হবে। ছয় ওভারে তাদের চেয়ে বেশি রান তুলব। সেই ছন্দটাই বড় হয়ে আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে।’

এই জয়ের পর চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এখন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।অর্থাৎ সিরিজ হারের আর কোনো সম্ভাবনা নেই সফরকারিদের। চতুর্থ ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ১৬ এপ্রিল সেঞ্চুরিয়ানে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২১)