রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের তৃতীয় দিনে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার শহর এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথারীতি কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু বিভিন্ন গ্রাম মহল্লার বাজারগুলোতে অনেকটাই শিথিল বিধিনিষেধ। কিছু কিছু স্থানে আবার পুলিশবাহিনীর কঠোরতার কারণে তাদের সাথে মানুষের বাকবিতন্ডার মত ঘটনাও ঘটেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে ঘুরে দেখা যায়,গ্রাম মহল্লার ভেতরের বেশিরভাগ দোকানপাটই খোলা দেখা গেছে। এলাকার রাস্তার পাশে অস্থায়ী এবং স্থায়ী কাঁচাবাজারগুলোতে ছিল লোকজনের ব্যাপক ভিড়। সে তুলনায় শহর রয়েছে অনেকটা প্রশাসনিক চাপে।

গত দুইদিনে দেখা গেছে, গ্রামের বাজারগুলোতে বিকেল হলেই হাটবাজারে মাছ, কাচাঁ সবজি, মুদি ও ইফতারির খাদ্যপণ্যের দোকানগুলোতে ভিড় চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। তখন স্বাস্থ্যবিধির বালাই থাকে না বলে জানিয়েছেন গ্রাম গঞ্জের মানুষেরা।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন সংযোগ পয়েন্টে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তারাও কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছে।নেকমরদ চৌরাস্তায় চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি আমরা চেক না করে ছাড়ছি না। উপযুক্ত অনুমতিপত্র না দেখাতে পারলে ফিরিয়ে দিচ্ছি। প্রয়োজনে শাস্তিও দেয়া হচ্ছে।’

তবে দায়িত্ব পালনের সময় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নেকমরদ চৌরাস্তায় নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হকের ছেলে মনির সাথে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পুলিশের চরম বাকবিতন্ডা হয়। পরিশেষে চেয়রাম্যান নিজেও পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এতে জনসম্মুখে পুলিশকে বিভিন্ন ভাষায় অপদস্ত করা হয়। এ দৃশ্য দেখতে নেকমরদ চৌরাস্তা মোড়ে উৎসুক মানুষের জটলা বেধে যায়।

খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) প্রীতম সাহা ঘটনাস্থলে গেলে তার সামনেই চেয়ারম্যানের ছেলে উত্তেজিত ম্যাজাজে কথা বলে। তবে অজ্ঞাত কারণে এসিল্যান্ড কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বিষয়টি সমাঝোতা করে নেই। এ সময় অপদস্ত একজন পুলিশ সদস্য এসিল্যান্ডের সামনেই চেয়ারম্যান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বিচার দেন। তবে ঘটনার সময় শ্রমিক নেতা বুধু’ও পুলিশের সাথে উত্তেজিত ম্যাজাজে কথা বলায় তাকে ধরে নিয়ে এসে মোবাইল কোর্টে অর্থদন্ড দেওয়া হয়। তাকে ধরে নিয়ে আসায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভও সঞ্চার হয়। তারা বলতে থাকে গরিব মানুষ তাই ক্ষমতা দেখালো,যাদের কেন্দ্র করে এ হট্রগোল তাদের ক্ষমতা দেখাতে পারলো না প্রশাসন। তবে তাকে ধরে নিয়ে আসার সময় সে-এসিল্যান্ডের কাছে পা’য়ে পড়ে ক্ষমা নেওয়ার চেষ্টা করেও রক্ষা পাইনি। এ ঘটনা নিয়ে বর্তমানে নেকমরদ শহরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) প্রীতম সাহা শুক্রবার মুঠোফোনে বলেন, আমাকে ওসি সাহেব জানালে আমি সেখানে যায়, সে-সময় একজন ব্যক্তি আইনশৃঙ্গখলার অবনতির পায়তারা করছিল। তাই তাকে ধরে নিয়ে এসে মোবাইল কোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর আগে পুলিশের সাথে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার ছেলের সাথে কি সমস্যা হয়েছিল তা তাদের ডেকে শুনেছি। পুলিশের সাথে যা ঘটেছে তা পুলিশ নিয়মিত মামলা করতে পারে সেটা তাদের বিষয়। আমি ম্যাজিস্টেট হিসাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকি আমার সামনে যা ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

(কেএস/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২১)