আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় গত পাঁচদিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ৭০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী। অন্যদিকে গত ১৫ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আড়াই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার সকালে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা। অনেকে আবার করোনা সংক্রমণের ভয়ে হাসপাতালে আসছেন না। বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দু’জনই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তারা করোনা সংক্রমণের ভয়ে হসাপাতালে ভর্তি হন নি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শঙ্কর প্রসাদ অধিকারী জানান, বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার দিকে শাহাবুদ্দিন গাজী (৩০) নামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের কৃষ্ণকাঠী গ্রামের শাহ আলম গাজীর পুত্র। বুধবার শাহাবুদ্দিন গাজী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। এরপর করোনা সংক্রমণের ভয়ে তিনি নিজ বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মীর মাধ্যমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শাহাবুদ্দিন গাজীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ডাঃ শঙ্কর প্রসাদ অধিকারী আরও বলেন, এর আগে গত ১০মার্চ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের চরবিশরকান্দি গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আলতাফ ফরাজীর মৃত্যু হয়। তিনিও বাড়িতে মারা গেছেন। মৃতের স্বজনরা জানান, ১০মার্চ সকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন আলতাফ ফরাজী। আক্রান্ত হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

ডাঃ শঙ্কর প্রসাদ অধিকারী বলেন, শুধু বৃহস্পতিবারই হাসপাতালে ৩৪ জন নতুন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৭০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়াও গত ১৫দিনে আড়াই শতাধিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

ডায়রিয়ার রোগীদের জন্য প্যান্ডেল

জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনের খালি জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। আর সেই প্যান্ডেলের নিচে নয়টি বেড দিয়ে অতিরিক্ত রোগীদের রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্যান্ডেলও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সরাসরি মাটিতে প্লাস্টিকের মাদুর পেতে রোগীরা থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে যে পরিমানে রোগী আসছে তাতে জায়গা সংকুলান হচ্ছেনা। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের বারান্দাসহ ওয়ার্ডের সামনের খোলা জায়গাতে রাখতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৫৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এনিয়ে গত দুই সপ্তাহে এ হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে প্রায় আট’শ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২১)