কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে উন্নত যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ অপারেশন থিয়েটার কিন্তু অ্যানেস্থেসিয়া ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ না থাকায় বছরের পর বছর ধরে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সরকারের লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি কোন কাজে আসছে না।

আছে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নেই টেকনেশিয়ান (রেডিও)। ফলে তালাবদ্ধ রুমে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আছে প্যাথলজি বিভাগ নেই টেকনোলজিষ্ট। ফলে রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষা করতে রোগীদের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। আছে এম্বুল্যান্স নেই চালক। জটিল ও গুরুত্বর রোগীদের স্থানান্তরে বাড়তি অর্থসহ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আছে শিশু, মেডিসিন, গাইনী ও সার্জারিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ কিন্তু নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ফলে কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এভাবেই চলছে উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর চরপুক্ষিয়া গ্রামের কুলছুম (৩৫), করগাঁও লাহৌন গ্রামের আয়েশা (৬০), মসূয়া কাজীরচর গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন (৫০) সহ আরও অনেকের সাথে কথা হয়। ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ কোন ডাক্তার না থাকায় তাদের জেলা সদরে যেতে হয়। বিশেষ করে প্রসূতিদের জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান সেবা নিতে যেতে হয় ৩০ কি.মি. দূরে কিশোরগঞ্জে, না হয় বেসরকারি ক্লিনিকে। করোনার এই সংকটকালে বাড়তি অর্থসহ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গরিব অসহায় রোগীদের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উন্নত যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ অপারেশন থিয়েটার, ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, প্যাথলজি বিভাগ, এম্বুল্যান্স থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, টেকনোলজিষ্ট ও সহায়ক জনশক্তির অভাবে করোনার এই দুর্যোগের সময় চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫টি জুনিয়ার কনসালটেন্ট পদ দীর্ঘদিন থেকেই শূণ্য রয়েছে। এছাড়া টেকনোলজিষ্টসহ বিভিন্ন সহায়ক জনশক্তির ৫৬টি পদ শূণ্য আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নাজমুস সালেহীন বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ শূণ্যপদ পূরণে জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। তবে আমাদের যেটুকু রয়েছে সেটুকু দিয়েই সাধ্যমত সেবাদান করে যাচ্ছি।

(ডিডি/এসপি/এপ্রিল ১৭, ২০২১)