স্টাফ রিপোর্টার : করোনাভাইরাসের কারণে গত এক বছরে লোকসান গুণতে গুণতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মার্কেট ও দোকানপাট খুলে না দিলে দুর্ভিক্ষে মালিক ও কর্মচারীরা মারা যাবেন। মার্কেট ও দোকান মালিকদের দাবি, সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন শুধু তারাই মেনেছেন। অন্যরা নানা অজুহাতে লকডাউন ভেঙেছেন।

তারা বলছেন, তারা লকডাউনের বিপক্ষে নন কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও নামতে চান না। তারা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট ও দোকানপাট খোলা রাখতে চান। প্রয়োজনে মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মার্কেটে আগত ক্রেতাদের ডাবল মাস্ক সরবরাহ করা হবে।

আগামী ২২ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশের মার্কেট, শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে রোববার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির অফিস কক্ষে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) দোকান মালিক সমিতির আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন মার্কেটের নেতারা এভাবেই তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।

এ সময় তারা দোকান খুলে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলালউদ্দিন।

পরবর্তীতে একে একে বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন।

নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘জীবন আর জীবিকার মধ্যে জীবন প্রায়োরিটিতে এসে গেছে। লকডাউনের উদ্দেশ্য জনঘনত্ব কমানো কিন্তু বর্তমানে কী দেখা যাচ্ছে? লকডাউন শুরুর আগে শুনেছিলাম সর্বাত্মক লকডাউন, এর সংজ্ঞা আসলে কী? সারা বাংলাদেশে আমরা যারা দোকানদার তারাই শতভাগ লকডাউন পালন করেছি। আরা সীমিত সুবিধা ও অমুক তমুকের আড়ালে অনেকের ব্যবসা ভালো চলছে। শুধুমাত্র দোকানদাররা বঞ্চিত হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই জীবন আগে কিন্তু বর্তমানের মতো যদি সবাইকে এভাবে সীমিত আকারের নামে সুযোগ দেয়া হয় তাহলে লকডাউন সফল হবে না।’ তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদেরও সুযোগ দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চাঁদনী চক মার্কেটের সভাপতি নিজামউদ্দিন বলেন, ‘করোনার সংক্রমণরোধে সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার যে নির্দেশনা রয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে প্রতিপালন করার শর্তেও সীমিত সময়ের জন্য মার্কেট খুলে দেয়া হোক।’

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজার, কাঁচাবাজার, উড়োজাহাজ সবই চলছে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি খোলা ও নির্মাণ কাজ চলছে। এত কিছু খোলা থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা কেন দোকানপাট খোলা রাখতে পারব না?’ লম্বা সময় ধরে দোকানপাট খোলা রাখলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বিঘ্নে বেচাকেনা করা যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ বস্ত্র মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের একজন পরিচালক বলেন, ‘রমজানের ঈদকে সামনে রেখে যে বস্ত্র তৈরি হয়েছে তা ঈদের পরে মূল্য এক চতুর্থাংশও থাকবে না।’

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা বাঁচতে চাই। মার্কেট ও দোকানপাট খুলে না দিলে দুর্ভিক্ষে মালিক ও কর্মচারীরা মারা যাবে। বছরের আটটি মাস রমজানে বেচাকেনার জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি।’

তাই ২২ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খুলে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০২১)