এম এ হিরা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : করোনার সংক্রমণ রোধে দ্বিতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল থেকে সারা দেশে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। করোনার সংক্রমণ রোধে বারবার সবাইকে ঘরে থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, ফার্মেসী, কাঁচাবাজার ছাড়া সবরকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তর যৌনপল্লীতেও পরেছে লকডাউনের প্রভাব। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারনে সারা দেশে লকডাউন চলছে। এরই ধরাবাহিকতায় বন্ধ রয়েছে যৌনপল্লীতে খদ্দের আসা-যাওয়া। তার প্রভাবের মধ্যে আর্থিক সমস্যায় পরেছেন যৌনকর্মীরা। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ এখান থেকে বাহিরে যেতে পারবেনা, বাহির থেকে কোন লোক পল্লীতে প্রবেশ করবেনা এটাই নির্দেশনা রয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যেখানে প্রতিদিন হাজার লোকের আসা-যাওয়া ছিল সেখানে লকডাউনের জেরে খদ্দেরদের দেখা নেই । পুরুষশূণ্য এই পল্লী আজ অসহায়। ফলে আর্থিক অনটনের মুখে দৌলতদিয়ার যৌনকর্মীরা। এ পল্লিতে সরকারি হিসেবে ১৬শত ও বেসরকারি হিসেবে ৫ হাজার যৌনকর্মী রয়েছেন।

যৌনপল্লীর কয়েকজন বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা জানান, সরকার থেকে আমাদের যেসব নির্দেশনা দিয়েছে আমরা তা পালন করছি তবে সরকারের নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে আজ আমরা অর্থনৈতিক সংকটে পরেছি । প্রশাসনের কথা মতো আমরা জরুরি প্রয়োজনে প্রধান ফটক দিয়ে বাইরে যেতে পারবো এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন মিটিয়ে আমাদের আবার ফিরতে হবে।

সরেজমিনে সোমবার সকাল ১০টার দিকে পল্লীর ভেতরে দেখা যায়, সেখানে কোনো ভিড় নেই, স্বাভাবিক সময়ে যেখানে যৌনকর্মীরা গলির ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকেন খদ্দেরদের জন্য, লকডাউনের কারণে তেমন চিত্র দেখা যায়নি। গলির ভেতরের দোকানও ছিল বন্ধ। ঘিঞ্জি পরিবেশ, অল্প জায়গায় বেশি মানুষের উপস্থিতি, সেই সঙ্গে পল্লীর বাসিন্দাদের অসচেতনতায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাস এখানে ভয়াবহ রূপ নেয়ার আশঙ্কা ছিল।

লক ডাউনের কারণে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কমলেও ভালো নেই যৌনপল্লীর যৌন কর্মীরা। তাদের একমাত্র উপার্জনের পথ ছিলো বাইরে থেকে আগত পুরুষগণ । করোনার কারণে আজ সেই বাইরে থেকে আগত পুরুষগণ যৌনপল্লীতে আসতে পারছে না। বাইরে থেকে পুরুষ না হলে আয় বন্ধ। অর্থ সংকটে পরছে তারা।

(এইচ/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২১)