কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : স্বপ্ন হলো সফলতার প্রথম ধাপ। নবীন উদ্যোক্তাদের কাছে স্বপ্ন দেখাটা দোষের নয়, বরং সেই স্বপ্ন থেকেই জন্ম নেয় ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস, তারপরই ধরা দেয় সফলতা। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে নতুন কিছু করার স্বপ্ন থেকে প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম, হলুদ তরমুজ চাষ করে সাড়া তৈরি করেছেন কলেজ পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থী। তারা হলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্নাস ২য় বর্ষে পড়ুয়া রাকিব ভুঁইয়া, রহমাতুল্লা হাসান (আংগুর) ও তাদের বাল্যবন্ধু ফয়সাল আহম্মেদ আকাশ।

করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকায় তাদেরকে যেহেতু বাড়িতেই থাকতে হয়। তারা নতুন কিছু করার চিন্তা করে। তারা ইউটিউবে ক্যাপসিকাম চাষ দেখে কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের দেওপাশা বাগ গ্রামে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে যাত্রা শুরু ‘আরএআর’ এগ্রো ফার্মের। প্রথমে ৪০ শতাংশ জমিতে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে চাষ করেন ক্যাপসিকাম । উৎপাদিত ক্যাপসিকাম বিক্রি করেন ৩ লাখ টাকা। তাদের লাভ হয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এবার তারা স্বপ্ন দেখে বড় আকারে কিছু করার। তারা নিজদের শ্রম, মেধা ও নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজেদের কৃষি উদ্যোক্তার ভূমিকায় দাঁড় করিয়েছেন। এবার লিজ গ্রহণ করেন ৫ বিঘা জমি। উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ করেন গোল্ডেন ক্রাউন বা হলুদ তরমুজ। সঙ্গে রোপন করেছেন ১০০টি রক মেলনের চারা।

তারা জানান, তরমুজের বেডে মালচিং ফ্লিম পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। তরমুজের বীজ বপন করার পর ফল সংগ্রহ করতে সময় লাগে ৬০ দিন। তরমুজ পরিপক্ক হয়েছে, এখন ফল সংগ্রহের সময়। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৬০-৬৫ হাজার টাকা। বাজার ভালো থাকলে উৎপাদিত তরমুজ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা লাভের প্রত্যাশা করছি। তাছাড়া রক মেলনে ফল আসতে শুরু করেছে। রক মেলনে সফল হলে আগামীতে বড় পরিসরে করার চিন্তা-ভাবনা আছে।

তারা আরোও বলেন, আমাদের মধ্যে নতুন কিছু করার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্নকে হৃদয়ে লালন করে বাস্তবে রূপ দিয়েছি। তারা জানান,তাদের এই উদ্যোগ সফল হওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মুকশেদুল হক ও চুয়াডাঙার কৃষি উদ্যোক্তা মো: খায়রুল ইসলাম পরামর্শ দিয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে।

জানা গেছে, হলুদ তরমুজ রসালো, মিষ্টি ও সুস্বাদু। রমজান মাস হওয়াই বাজারে এর চাহিদা প্রচুর ও দাম ভালো রয়েছে। নয়নাভিরাম ও দৃর্ষ্টিনন্দন হলুদ তরমুজ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তারা। তাই প্রতিদিন কেউ না কেউ আসছেন এ তরমুজ দেখতে। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা এ ধরনের তরমুজ চাষের ব্যাপারে আগ্রহ করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মুকশেদুল হক জানান, তিন শিক্ষিত যুবক উপজেলায় প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি আকর্ষণীয় ও লাভজনক ফল। বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে। আগামীতে উপজেলায় এই জাতের তরমুজ চাষ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন।

(ডিডি/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২১)