আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও : প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কোচিং ও প্রাইভেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ থাকলেও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় বেশ কিছু কোচিং সেন্টার ঠিক উল্টো পথে হাটছে। কিছু অসাধু কোচিং মালিক সরকারি আদেশের তোয়াক্কা না করেই চুপচাপ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কোচিং বাণিজ্য।

সোমবার সকালে শহরের বসিরপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় সুমন ও সুজন কোচিং সেন্টার চালু রেখে ২/৩ জন শিক্ষককে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর দৃশ্য । সুমন ও সুজন কোচিংয়ের দায়িত্বরতরা বলেন তারা অনলাইনে কোচিং করাচ্ছেন, তবে কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীরা কি করছে তার কনো সদুত্তোর মেলেনি।

সুমন ও সুজন কোচিংয়ের পাশেই বেনামি আরেক কোচিংয়ে পড়াতে দেখা যায় মাছুম বিল্লাহ নামে আরেকজনকে, তবে তিনি ক্যামেরা দেখেই কোচিং ছুটি দিয়ে দেন।

এসব শিক্ষক ভাড়া করা কক্ষে ব্যাচ করে একসঙ্গে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে বসিয়ে টিউশন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে সদর উপজেলার শিক্ষার্থীরা করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকির মাঝে রয়েছেন। এভাবে দলবদ্ধভাবে কোচিং কতটা নিরাপদ তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানিয়রা ।

গত বছরের মার্চ মাসের ১৬ তারিখে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এদিন সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ নির্দেশ দেন তিনি। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত সেই নির্দেশ জারি রয়েছে। কোচিং চালুর ব্যাপারে নতুন করে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোচিং সেন্টার চালু থাকায় সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। করোনার ঝুঁকি নিয়ে কোচিং সেন্টারে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। অভিভাবকদের দায়িত্বে অবহেলা ও খামখেয়ালীপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সচেতনমহলে।

তবে স্থানিয় প্রশাসনও থেমে নেই, গত রোববার গোপনে শিশুদের কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ ফোর্সসহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন একটি কোচিং সেন্টার বন্ধ করেন এবং শিক্ষককে জরিমানাও করেছেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, লকডাউনে যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, সেখানে অযাচিতভাবে যারা কোচিং বানিজ্য চালাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।আমরা মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি পাশাপাশি অভিভাবকদের এ বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

(আই/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০২১)