নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাট-আগ্রাদ্বিগুন সড়কের বীরগ্রাম সেতুটি সংস্কারের অভাবে জটিল আকার ধারণ করেছে। যে কোন সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বর্ষা মৌসুমের আগে সেতুটি মেরামত করা না হলে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নসহ পার্শবর্তী সাপাহার, পোরশা উপজেলা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার হাজার হাজার মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। এতে ওই এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 

জানা গেছে, ধামইরহাট-আগ্রাদ্বিগুন সড়কের বীরগ্রাম সেতুটির মাঝখানে ঢালাই উঠে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। সেতুর মাঝখানে বালু, খোয়া উঠে গিয়ে রড বের হয়ে আছে। সেতুর মাঝখানে এ গর্ত হওয়ায় শুধুমাত্র দক্ষিণ পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করছিল। পুরো সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

যে কোন সময় পুরো সেতু ভেঙ্গে যেতে পারে। সেতুর ওপর পূর্বে একটি বড় গর্তে স্টীলের পাত দিয়ে কোন রকমে সচল করা হয়েছে। কিন্তু তার পূর্ব পার্শে আরও একটি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। দিন দিন এ গর্তের আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোন সময় গর্তের চারিদিকে ঢালাই উঠে গিয়ে পুরো সেতু অচল হয়ে যেতে পারে। সেতুটি বন্ধ হলে এলাকার হাজার হাজার মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

এ রাস্তা দিয়ে উপজেলার আলমপুর, খেলনা, আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী সাপাহার,পোরশা উপজেলা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার হাজারো মানুষ ধামইরহাট,জয়পুরহাট হয়ে দিনাজপুর, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে। তাছাড়া এ রাস্তা দিয়ে এলাকার হাজার হাজার টন বোরো ধান ও শাকসবজি ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন আত্রাই নদী থেকে শত শত অতিরিক্ত বালুভর্তি অবৈধ ট্যাক্টর চলাচলের কারণে রাস্তা ও সেতুর মারাত্মক ক্ষতি করছে।

এসব ট্যাক্টর নিয়ন্ত্রণহীন ও দ্রুত গতিতে চলাচল করার কারণে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করছে। বীরগ্রামের শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি মেরামত করা জরুরী। এ সেতুটি বিকল হলে এলাকাবাসীকে জেলা ও উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে অনেক কষ্ট করতে হবে। আগ্রাদ্বিগুন বাজারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. আবু মুসা বলেন,সকল প্রকার অফিসিয়াল কাজকর্ম করতে আমরা সবসময় এ রাস্তা ব্যবহার করি। সেতুটি মেরামত করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে মানুষকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

এব্যাপারে এলজিইডি ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মো.আলী হোসেন বলেন, এ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত বালুভর্তি ট্যাক্টর (মেসি) পারাপার হয়। এসব রুট পারমিট বিহীন ট্যাক্টরের চাকার ধরণের সাথে গতিবেগের মিল নেই। চাকার ধরণ বলছে সীমিত গতিবেগ থাকবে। কিন্তু ট্যাক্টরের অদক্ষ চালকরা দ্রুতগতিতে এসব গাড়ি চালায়। যার কারণে রাস্তা ও সেতুর ওপর অতিরিক্তি চাপ পড়ে।

প্রায় ২১ বছর পূর্বে নির্মিত হলেও এসব অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত অতিরিক্তি বালু ভর্তি ট্যাক্টর যাওয়ার কারণে সেতুটি দুই দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেতুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে চলতি অর্থ বছরে এলজিইডি,নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি এলজিইডির সদর দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। সদর দপ্তর থেকে সেতু এলাকার মাটি পরীক্ষা অচিরেই করবে। তিনি আরও বলেন,আশা করছি অচিরে নতুন সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

(বিএস/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০২১)