আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর কালুখালি উপজেলার আবাদি মাঠে হাওয়ায় দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। দিগন্ত জোড়া মাঠ জুড়েই চোখ জুড়ানো দৃশ্য। সর্বত্র চলছে ধান কাটা ও শুকানোর সরঞ্জাম এবং মাড়াইয়ের জায়গা তৈরির কাজ।

সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও এবার করোনাভাইরাসের প্রভাব, পাতাপুড়া রোগ ও গরম বাতাসে বোরো ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এরপরও আগামি দিনে আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আশায় বুক বেধেঁছেন কালুখালি উপজেলার কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১২ হাজার ১১৬ হেক্টর জমি বোরো চাষ হয়েছে। খাদ্যশষ্য উৎপাদেন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৩২ মেট্রিক টন।

উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ফসলি মাঠে কাচা-পাকা ধান বাতাসে দুলছে। কৃষক-কৃষানিরা প্রহর গুনছেন কখন ঘরে তুলবেন বছরজুড়ে হাড়ভাঙ্গা প্ররিশ্রমে ফলানো সোনার ফসল। বৈশাখের সাথে সাথে গত কয়েকদিন ধরে ধান কর্তন শুরু হয়েছে।

কয়েকজন কৃষকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, দিনরাত পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েছি। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে দুশ্চিন্তায় আছি। ফসলের ক্ষতি হয়েছে পাতাপুড়া রোগ ও গরম বাতাসেও। তবে সামনে শ্রমিক সংকটসহ আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এবং ধানের ন্যায্য মূল্য পেলে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে আশা করেন তারা।

কৃষক নিরঞ্জন মিয়া বলেন, এবছর তিনি বোরো ধান আবাদ করেছেন। কিছু জমিতে পাতাপুড়া রোগে আক্রমণ করলেও বাকি জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। আগামী শুক্রবার থেকে ধান কর্তন শুরু করবেন।

কৃষক মিলন দাস বলেন, দুই বিঘা জমিতে বোরো ফসল আবাদ করেছেন। আশা করছেন ভালো ফলন হবে। গত বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি। সরকার বেশি দামে ধান কিনলেও আমাদের মতো সাধারণ কৃষক তা বিক্রি করতে পারেননি। তাই আমরা সঠিক দাম পাইনা। যাতে সঠিক মূল্য পাই সরকার সে ব্যবস্থা যেন করে দেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ধান কর্তন শুরু হয়েছে। এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। আগামি কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে বলে ধারনা করছি। এখন পর্যন্ত ৭০ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামি মাসের শেষের দিকে ধান কর্তন শেষ হয়ে কৃষকের গোলায় ধান উঠে যাবে।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০২১)