আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও : দেশের উত্তরের কৃষিনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলায় সব ধরনের ফসল ও সবজির পাশাপাশি মরিচের ফলনও হয় বেশ ভালো। তবে চলতি মৌসুমে মরিচ চাষের শেষ পর্যায়ে মরিচ ক্ষেতে ফল পচা বা টেপাপচা (অ্যানথ্রাক্সনোজ) রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগের কারণে গাছের মরিচ গাছেই পচে যাচ্ছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন এখানকার মরিচ চাষিরা।

মরিচের পচন রোগের এ বিষয়টি পুরো জেলায় দেখা গেলেও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় এর প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা যায় ।

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলি ঘুরে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা কৃষক মরিচ চাষ করেছেন। তবে ক্ষেতের অধিকাংশ গাছেই এই রোগ আক্রমণ করেছে। আক্রান্ত গাছ গুলোতে আসা ফল পচে মাটিতে ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে চলতি মৌসুমে জেলায় ৪শ’৪২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

চাষিরা বলেন, “আমরা মরিচ চাষের জন্য অন্যের জমি চুক্তিতে আবাদ করছি। কিন্তু টেপাপচা রোগের কারনে ফলন্ত মরিচ গাছ গুলো মারা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের বিঘা প্রতি ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ উঠানোই কঠিন হয়ে যাবে। মরিচ তুলতে না পারলে সার কীটনাশকসহ জমির মালিকের টাকা পরিশোধ করবো কিভাবে তা ভেবে পাচ্ছি না। সঠিক কোন পরামর্শও পাচ্ছি না কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। এভাবে পথে বসে যাবো আমরা ।” কৃষকদের অভিযোগ কৃষকের প্রয়োজনে কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে পাওয়া যায় না।

রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র জানান, ব্যক্টেরিয়া রোগের কারণে এমন হচ্ছে। তিনি কৃষকের উদ্দেশ্যে বলেন, কৃষকরা বিভিন্ন জনের কথায় প্ররোচিত হয়ে বিভিন্ন বিষ এবং কীটনাশক স্প্রে করে থাকেন, যার জন্য কৃষিতে উপকারের তুলনায় ক্ষতিই বেশি হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন জানান, ইতি মধ্যে ৪শ’ ৪২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। আমাদের টার্গেট ৮শ’ ২ হেক্টর জমিতে চাষ করার। স্থানীয়ভাবে টেপাপচা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মরিচ ক্ষেত। তবে টেপাপচা রোগ থেকে কিভাবে ফলকে রক্ষা করা যায় সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।

কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষকরা মাঠে পাচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

(আই/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০২১)