অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে নেয়া হয়েছে লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ।লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য শহর ও গ্রামঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। শুধুমাত্র কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু এসব দোকানও সন্ধ্যার পর বন্ধ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তা-ঘাট। লকডাউনের কবলে পরে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

শহরের রাস্তায় দু’একটি করে রিকশা, অটোরিকশা দেখা গেলেও ভাড়া পাচ্ছেন না চালকরা। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। এদিকে, জেলা-উপজেলায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মাইকিং করে দোকানপাট, যান চলাচল বন্ধ রাখাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। আর এ নির্দেশনা কার্যকর করতে প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ শহরের রিকশাচালক হাফিজুল বলেন, শহরে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই, তাই যাত্রী মিলছে না। বর্তমানে এমন অবস্থা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৮৫ টাকা রোজগার হয়েছে। আয় রোজগার করতে না পারলে পরিবারের মুখে খাবার জুটাবো কি করে।

শহরের আরও কয়েকজন রিকশাচালক বলেন, আমরা গরিব মানুষ প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে চাল-ডাল কিনে খাই। বিধি নিষেধ থাকলেও উপায় নেই আমাদের। তাই সব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই রিকশা নিয়ে ঘুরছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারেই থাকতে হবে। এসময় যদি কেউ সাহায্য করতো অনেক উপকার হতো।

শৈলকূপার সেলুন ব্যবসায়ী সঞ্জয় কুমার বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে খাচ্ছি। যদিও এনজিও লোন বন্ধ তারপরও খুললেই তো কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। লকডাউনের কারণে গত কয়েকদিন ধরে দোকান বন্ধ রয়েছে। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দোকান ভাড়া ও সংসার চালানোর কোনো উপায় পাচ্ছি না।

এ অবস্থায় এইসব মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস। তিনি বলেন, সকলের কল্যাণের জন্যই সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু আশেপাশে এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা দিনের রোজগার দিয়ে সেদিনের আহারের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি কিছু ভাসমান মানুষও রয়েছে। সেই সকল খেটে খাওয়া পরিশ্রমী মানুষ যাতে না খেয়ে না থাকেন, সে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০২১)