আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারত, রাশিয়া, ভিয়েতনাম ও সিরিয়াকে কালোতালিকাভুক্ত করার সুপারিশ জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের একটি স্বাধীন কমিশন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ তালিকায় আগে থেকেই নাম রয়েছে চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইরান, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, ইরিত্রিয়া, উত্তর কোরিয়া, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) গত বুধবার তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করে বলা হয়েছে, প্রথম চারটি দেশকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ (সিপিসি) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, ইউএসসিআইআরএফ তাদের গত বছরের প্রতিবেদনেও ভারতকে সিপিসি ঘোষণার সুপারিশ করেছিল।

কমিশনের এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি নেতিবাচক অভিমুখ অব্যাহত রেখেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশটিতে হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রচার করেছে, যার কারণে সেখানে নিয়মতান্ত্রিক, চলমান ও গুরুতরভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন হয়েছে।

গত বছর দিল্লির দাঙ্গায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে পুলিশি দমন-পীড়নের অভিযোগ এবং মোদির নেতৃত্বে নাগরিকত্ব আইন বিষয়ক উদ্বেগ অব্যাহত থাকার কথাও প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে মার্কিন কমিশন।

নতুন প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। তবে গত বছরের প্রতিবেদনকে তারা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ মন্তব্য করে এর অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছিল।

নতুন প্রতিবেদনে বাইডেন প্রশাসনের কাছে ধর্মীয় স্বাধীনতায় কালোতলিকাভুক্ত বিভিন্ন দেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপ থেকে বিরত থাকার নীতি পুনর্মূল্যায়নেরও আহ্বান জানিয়েছে ইউএসসিআইআরএফ।

তারা বলেছে, পাকিস্তান, সৌদি আরব, নাইজেরিয়া, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের [নিষেধাজ্ঞা] ছাড় পর্যালোচনা করা এবং এর অর্থবহ পরিণতি প্রদর্শনের জন্য যথাযথ নীতিমালা পরিবর্তন প্রয়োজন।

পাকিস্তানের বিষয়ে কমিশন বলেছে, দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সেখানকার সরকার নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্লাসফেমি (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত) আইনের অপব্যবহার করছে এবং তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হয়রানি থেকে রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

চীনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার আবারও অবনতি হয়েছে। দেশটির সরকার বিদেশি যোগসাজশ রয়েছে ধারণাযুক্ত ধর্মগুলো- যেমন খ্রিস্টান, ইসলাম এবং তিব্বতি বৌদ্ধধর্মকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এসব গোষ্ঠীর ওপর নজরদারি, আটক, নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছে কমিশন।

রাশিয়াতেও গত বছর ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসসিআইআরএফ। রুশ সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘অপ্রথাগত’ জরিমানা, আটক ও অপরাধের অভিযোগ এনেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবারের প্রতিবেদনে। রেডিও ফ্রি ইউরোপ।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২২, ২০২১)