রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : দুই কিংবা চার সাটারের দোকানে একটি সাটারের অর্ধেক তুলে কাস্টামারের কাছে বেচাকেনা। আবার এক সাটারের ভিতর দিয়ে দোকানে কাস্টমার প্রবেশ করালেও সাটারে একজন দাড়িয়ে থেকে দেয় পাহারা। পুলিশ বাহিনী কিংবা উপজেলা প্রশাসনের কোন গাড়ী দেখলেই দ্রুত সাটার নামিয়ে দিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাকিঁ দেওয়ায় যেন এখন তাদের নিত্যদিনের কাজ।

এ চিত্র ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন দোকানদারদের। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশ ব্যাপী কঠোর লকডাউনে নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান খোলা ও সাধারণ মানুষের চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। তবে রাণীশংকৈল উপজেলায় মানুষের অবাধ চলাফেরা ও সব দোকানেই চলছে লুকোচুরি করে। এতে বিশেষ করে শহর জুড়ে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্যে করা যাচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের বন্দর বাজারে খুচরা কাপড় বিতান জুতা কসমেটিক হার্ডওয়ার সিমেন্ট টিন রড চা পান দোকানগুলোতে বেচাকেনা করতে দেখা যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের এক সাটার খুলে কাস্টমার দোকানে ঢুকিয়ে বেচাকেনা করছে,আবার কেউ দোকানে কাস্টমার ঢুকিয়ে বাহির দিয়ে সাটার বন্ধ করে ভেতরে বেচাকেনা করছে। বেচাকেনার ক্ষেত্রেও উপেক্ষা করা হচ্ছে স্বাস্থ্য বিধি। একাধিক দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের ঢুলে বসে ঘায়ে ঘা ঘেষেঁ মুখে মাস্ক না রেখে হার-হামেশায় কাস্টমার ও দোকানদার কথাবার্তা চলছে।

এসময় হরিপুর উপজেলা থেকে আসা সাইফুল নামে এক যুবকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের তিনি জানান,হরিপুরে তেমন ভালো কাপড় সহজে মিলে না। তাই রাণীশংকৈলে এসেছি কাপড় কিনতে। একইভাবে গোগর এলাকার এক নারী জানান, তিনি তার বাচ্চার জামা প্যান্ট নিতে এসেছেন, তিনি শুনেছেন দোকান খোলা থাকে তাই এসছেন কিনতে এবং কিনেও ফেলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানদার জানান,আমাদের প্রায় দোকানে দু-চারজন করে কর্মচারী রয়েছে,আমাদের পরিবার রয়েছে। বিগত আটদিন ধরে লকডাউন চলছে। তার উপর রমজান মাস এমনিতেই পারিবারিক খরচ বেশি হয় এ মাসে তাই উপায়ন্তর না পেয়ে লুকোচুরি করে সামান্য ব্যবসা করে দোকান কর্মচারীসহ আমাদের পরিবারগুলো কোনমতো চালিয়ে নিচ্ছি।

জানতে চাইলে পৗর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের চেয়ে আগে নিজের জীবন বাচাঁতে হবে। তাই সরকারের নির্দেশনা মেনে ব্যবসায়ীদের দোকান পাট বন্ধ রেখে এই কয়েকটা দিন তাদের কর্মচারীদের পাশে দাড়াঁনো উচিত। কারণ দেশ যদি ভালো না থাকে তাহলে আপনি আমি কেউ ভালো থাকবো না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন বলেন, সরকারী নির্দেশনার বাইরে কেউ দোকান পাট খুললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য আমাদের টিম সার্বক্ষনিক কাজ করছে।

(কেএস/এসপি/এপ্রিল ২২, ২০২১)