আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জান বড় না মান বড়- এ প্রশ্ন আবারও উসকে দিলেন ভারতীয় নেতারা। পুরোনো সব রেকর্ড ভেঙে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো একদিনে তিন লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে। সংক্রমণের এমন ভয়াবহতা বিশ্বের অন্য কোথাও আগে দেখা যায়নি। অথচ এরপরও থেমে নেই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রতিযোগিতা। ভারতে বিশ্বরেকর্ড সংক্রমণের দিনও রাজ্যটিতে চলছে ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ। সেখানে একের পর এক জনসভা করে যাচ্ছেন বিজেপি-তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গে তিনটি নির্বাচনী সভা করছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ। প্রথমটি হরিরামপুরে, পরেরটি মালদহে আর তৃতীয় হবে দূর্গাপুর পূর্বে।

পিছিয়ে নেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ভোটের দিন তিনিও সকাল সকাল জনসভা করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে।

রেকর্ড সংক্রমণের দিন সভা করলেও এদিন মমতার মুখে ছিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা। এসময় রাজ্যবাসীকে বিনাপয়সায় টিকা দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ তুলেছেন, টিকা কেনার ক্ষেত্রে দামের বৈষম্য করে অন্যায় করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সংক্রমণের ভয়ে বসে না থেকে রাজ্যের সবাইকে মাস্ক পরে ভোট দিতে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জনসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, ভোট না দিলে ভোটার তালিকা থাকে নাম বাদ দিয়ে দেবে বিজেপি। এনআরসি, এনপিআর করার সুযোগ পেয়ে যাবে। এ কারণে সবাইকে তৃণমূলে ভোট দিতে হবে।

এদিকে, বিজেপির হয়ে শুধু পাল্টাপাল্টি সভা করাই নয়, মহামারির মধ্যে অমিত শাহ ঠিকঠাক স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মুখে মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন তিনি। তা-ও আবার একটি করোনা চিকিৎসাকেন্দ্র পরিদর্শনকালে। এসময় সঙ্গে থাকা বাকিদের মুখে মাস্ক থাকলেও ছিল না শুধু অমিত শাহর। এছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের আগের জনসভাগুলোতেও ভাষণ দেয়ার সময় মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে তাকে।

এসব ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীরাই স্বাস্থ্যবিধি পালন না করলে তাদের সংস্পর্শে আসা সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ালে দায় নেবে কে? তাদের কাছে কি মানুষের জীবনের চেয়ে রাজনীতিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে? হিন্দুস্তান টাইমস, ওয়ান ইন্ডিয়া, কলকাতা টাইমস।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২২, ২০২১)