ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালীতে নিজ স্বামীর বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে পেলায় জীবন দিতে হলো এক গৃহবধূকে। পূর্বপরিকল্পিত ভাবে স্বামী সবুজ ও তার বড় ভাবী রোজিনা আক্তার তার মুখ বন্ধ করতে গৃহবধূ নুর জাহান বেগম সুমিকে ঘরের মধ্যে বেঁধে পিটাতে থাকে কিছুক্ষণ মারধরের পর সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বলে অভিযোগ করেন নিহত সুমির মা ফেরদৌসি বেগম।

এ ঘটনায় নিহতের মা ফেরদৌসি বাদী হয়ে গতকাল ২৩ এপ্রিল নোয়াখালী সুধারাম থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। সুমিকে হত্যার পর থেকেই পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে ২১ এপ্রিল (বুধবার) নোয়াখালী সুধারাম থানার এওজবালিয়া ইউনিয়নের পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের আক্কাস মিয়ার বাড়ীতে। নিহত নুর জাহান বেগম সুমি (২১) সুবর্ণচর উপজেলার ১ নং চরজব্বার ইউনিয়নের চর রশিদ গ্রামের নুর নবীর কণ্যা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃস্টি হয়েছে, এলাকায় বিরাজ করছে শোকের ছায়া।

নিহতের মা অভিযোগ করে বলেন, সুধারাম থানার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের আলী আক্কাসের পুত্র মোঃ সবুজ (৩০) এর সাথে গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে মুসলিমীন রিতিনীতি মেনে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। সবুজের বড় ভাই খোকন অন্য একটি জেলার ইটভাটায় কাজ করে তার স্ত্রী একাই বাড়ীতে থাকে। এরই সুবাধে দেবর ভাবী একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এ ঘটনা থেকে ফেরাতে সবুজকে আমার মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় সবুজের অভিবাবকগণ। তখন আমরা সবুজের পরিবারে এসব নোংরা ঘটনা জানতাম না।

বিয়ের কিছুদিন যেতেই সবুজ সুমিকে বার-বার বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। একাধিকবার এরকম হওয়ার পর সুমি নিজ ইচ্ছায় স্বামীর বাড়ীতে থেকে যায় ঘটনার ৩ দিন আগে সবুজের বড় ভাই খোকনের স্ত্রী রোজিনা আক্তারের রুম থেকে ধস্তাধস্তিরর শব্দ শুনে সুমি রোজিনার ঘরে প্রবেশ করে দেখেন রোজিনা এবং সবুজের অনৈতিক সম্পর্কের মিলিত হয়েছেন।

হাতে নাতে এ ঘটনা দেখে পেলার পর সুমি প্রতিবাদ করলে সুমিকে হত্যার হুমকি দেয়। সুমি পালিয়ে বাবার বাড়ীতে চলে আসে এবং পরিবারের সবাইকে ঘটনা খুলে বলে। ঐ দিনই সবুজ শশ্বর বাড়ীতে এসে সুমিকে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এমন এ ঘটনা জানিয়েছে কেন সেটার প্রতিশোধ নিবে। পরদিন ২১ এপ্রিল বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায়। এসব নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে রোজিনা সুমিকে চাপ প্রয়োগ করে এতে সুমি প্রতিবাদ করলে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে, সুমিকে সবুজ এবং রোজিনা এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে। পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

সরজমিনে গেলে সবুজের বাড়ীর সবাই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্বভ হয়নি। পূর্ব এওজবালিয়া এলাকার স্খানীয় বাসিন্দারা বলেন, সবুজ এবং তার ভাবীর অনৈতিক সম্পর্কের কথা আমরা অনেক দিন ধরে শুনে আসছি, সবুজ এক ধরনের চরিত্রহীন, লম্পট, এলাকায় কাউকে মানেনা, নতুন বিয়ে করার পর থেকে সে মেয়েটাকে মারধর করতে শুনেছি।

সুধারাম থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) সাহেদ উদ্দিন বলেন, "বাদীনির অভিযোগ আমরা পেয়েছি, তবে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।"

(এস/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২১)