আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশাল জেলার মধ্যে ধান উৎপাদনকারীর অন্যতম উপজেলা আগৈলঝাড়ায় চলতি বোরো মৌসুমে ইরি ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১শ ৫০হেক্টর জমি বেশী আবাদ হওয়া এলাকায় চলছে ধান কাটার ভরা মৌসুম। দিগন্তজোড়া মাঠের পর মাঠ পাকা ধানের সোনালী রংয়ের দৃশ্য ও ধানের বাজার মূল্য ভাল পেয়ে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দোলন চন্দ্র রায় জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ৩শ হেক্টর জমি ইরি-বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু করা হলেও এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১শ ৫০হেক্টর জমি বেশী আবাদ করেছেন কৃষকেরা।

চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৫০ হাজার ৪শ ৫০ মেট্টিক টন। যার মধ্যে ৪৮ হাজার ৪শ মেট্টিক টন হাইব্রীড ও ২০৫০ মেট্টিক টন উফসী জাতের চাল।

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ইতোমধ্যেই শতকরা ৪০ভাগ পাকা ধান কাটা হয়েছে। সে হিসেবে বুধবার পর্যন্ত ৩ হাজার ৭শ ৮০ হেক্টর জমির ধান কেটে গোলায় তুলেছেন কৃষকেরা। বর্তমান আবহাওয়া চলমান থাকলে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মাঠের সব পাকা ধান কাটা শেষ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মন্ডল জানান, উপজেলার সর্বত্র ধানের ভাল ফলন হয়েছে। যা বাম্পার ফলন হিসেবে বলা যায়। সূত্র মতে, হেক্টর প্রতি হাইব্রীড ধানের ফলন হয়েছে ৮ মেট্টিক টন এবং উফসী ধানের ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি সাড়ে ৬ মেট্টিক টন। যা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অতিক্রম করবে বলেও জানান তিনি।

উঠতি ধানের বাজার মূল্য ৮শ থেকে ৮শ ৫০টাকা পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ধান কাটা মৌসুমে বৃষ্টি বা মেঘের আনাগোনা না থাকায় রৌদ্রজ্জল আবহাওয়ায় ধানের রং ভাল হবার পাশাপাশি এলাকায় ধান কাটা শ্রমিকের কোন ঘাটতি না থাকায় কোন রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই কৃষকেরা তাদের পাকা ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। ধান ঘরে তোলার পাশাপাশি খর বা কুটা রোদে শুকাতে পারায় এবছর গবাদী পশুর খাদ্যর কোন ঘাটতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়।

কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় আরও বলেন, ২৮ এপ্রিল থেকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকার ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্ভোধন করলেও উপজলো খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উপজেলায় ধান ক্রয়ের বরাদ্দর পরিমান বা কবে থেকে ধান ক্রয় শুরু হবে সে বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ধান বিক্রির জন্য কৃষকের তালিকা প্রনয়নের কাজ তার অফিস করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২১)