সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : বৈশাখের বোরো ধান, বন ঝাড়াই মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কিষাণ কিষানীরা। সারা বছরের খাবার গোলায় তোলার জন্য অধির অপেক্ষায় থাকলেও সম্প্রতি বয়ে যাওয়া গরম বাতাসে অনেক ধানগাছ বিবর্ণ হয়ে গেছে। ফলে ক্ষতি পোষিয়ে ওঠতে মাঠেই বিক্রি হচ্ছে ৮শ ৫০ টাকা মনদরে ভেজা ধান।

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের বোরো ধানের মাঠ ঐতিহাসিক জালিয়ার হাওরের পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এই হাওরে ২৮ জাতীয় ব্রি ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এসব কাটা ধান মাড়াই ঝাড়াই করে বন (গো খাদ্য) সংরক্ষন করছেন কৃষকরা স্তুপ আকারে। অপরদিকে জমির শতকরা ২০ ভাগ ধান গরম বাতাসে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কৃষকদের মনে খুব একটা আনন্দ নেই। ২৯ জাতের ব্রি ধান এখনও পুরোপুরি কাটা শুরু হয়নি।

মোজাফরপুর ইউনিয়নের বড়তলা পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক হাদিস মিয়া জানান, জমিতে যে ধান হয়েছিল গরম বাতাসে নষ্ট না হলে আমাদের চাষের খরচ পোষাত। কিন্তু ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সে ক্ষতি পোষাবেনা। ২৯ জাতের ব্রি ধান কাটার পর গোলায় তুলব। সেসব জমি এখনও কাটা হয়নি। দিনের অবস্থা কি হয় জানিনা, তবে আল্লাহর রহমত থাকলে সে ধান ঘরে তুলে সারা বছর পোলাপাইন নিয়া খাইতে পারব। তিনি জানান ২৮ জাতের যেসব ধান কাটা হয়েছে সেসব ধান আমরা মাঠেই বিক্রি করে দিচ্ছি। প্রতিমন ধানের দাম ৮শ থেকে ৮শ ৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবীর জানান, কেন্দুয়া উপজেলায় যেসব কৃষকদের গরম বাতাসে বোরো ধান ক্ষতি হয়েছে, দিন রাত পরিশ্রম করে সহকর্মীদের নিয়ে সেসব কৃষকদের তালিকা তৈরি করে কৃষি মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হচ্ছে। কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিতেই সরকার কৃষকদের তালিকা সংগ্রহ করছেন।

তিনি জানান, কেন্দুয়া উপজেলায় ২০ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঝরো হাওয়া ও গরম বাতাসে ৩ হাজার ২০ হেক্টর জমি প্রাথমিক তথ্যে ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে উপজেলা কৃষি বিভাগকে জানানো হয়েছে কেন্দুয়া উপজেলায় ৬ হাজার ২শ ৬৫ জন কৃষক সরকারের আর্থিক সহায়তা পাবেন।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২১)