মোঃ শান্ত, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় গ্যাসের চুলার পাইপ লাইনের বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান দগ্ধ হাবিবুর রহমান। এর আগে রোববার দিবাগত রাতে মারা যান তার স্ত্রী আলেয়া বেগম।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোরে ফতুল্লার তল্লা জামাইবাজার এলাকায় মফিজুল ইসলামের তিনতলা বাড়িতে বিস্ফোরণে শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন।

মৃত হাবিবুর রহমানের জামাতা বিপ্লব হোসেন জানান, ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়। সকাল ১০টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড থেকে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

শুক্রবারের বিস্ফোরণে ওই বাড়ির তিন তালার ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের ছয়জন আগুনে দগ্ধ হন। গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণে তিন তলার পুরোটা বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ঘটনার দিন খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানোসহ দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় গার্মেন্টস শ্রমিক কয়েকটি পরিবার বসবাস করতো। রাতে দগ্ধ পরিবারের লোকজন চুলার বার্নার বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাতে চুলা থেকে গ্যাস বের হয়ে রান্নাঘরসহ অন্যান্য ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। ভোরে যখন রান্নার জন্য চুলায় আগুন জ্বালায় তখন গ্যাসের পাইপ লাইনের বিস্ফোরণ ঘটে।

তবে বিপ্লবের দাবি, চুলা বন্ধ ছিল। লাইনে লিকেজের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও ওই এলাকায় বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটেছে। এজন্য গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা দায়ী।

বিপ্লব জানান, পরিবারের ছয়জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিপ্লবের স্ত্রী ও তিন মাসের পুত্রসন্তান মিহির, শ্বশুর হাবিবুর রহমান, শাশুড়ি আলেয়া বেগম, আলেয়ার বৃদ্ধা মা, নবম শ্রেণি পড়ুয়া শ্যালক।

তাদের মধ্যে আলেয়া বেগম আইসিইউতে ছিলেন। তার শরীরের ৮০ ভাগের বেশি পুড়ে যায়। তিনি রোববার মারা যান। এর একদিন পর হাবিবুর রহমান মারা গেলেন। তার অর্ধেক শরীর পোড়া ছিল।

(এস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২১)