নওগাঁ প্রতিনিধি : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেছেন, প্রধানন্ত্রীর নির্দেশে কৃষককে ন্যায্য মূল্য দিতেই সরকার এবার ২৭ টাকা কেজি দরে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ মেঃ টন সিদ্ধ চাল ও ৩৯ টাকা দরে দেড় লাখ মেট্রিকটন আতপ চালের দাম নির্ধারন করে দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, অনেকেই বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলেছেন। আগে আমরা দেখবো যদি কৃষকরা নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত না হয়, তাহলে বরাদ্দ বাড়ানো হবে। তবে আগে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পোঁছাতে হবে। কোন ক্রমেই এই লক্ষে পৌঁছাতে গাফলতি করা যাবে না।

বুধবার দুপুরে তিনি নওগাঁ, বগুড়া, দিনাজপুর, নেত্রকোনাসহ ৯টি জেলায় ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বোরো ধান ক্রয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

এসময় খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কৃষক ও মিল মালিকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে দেশের খাদ্য মজুদ গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও কোন কৃষক যাতে গুদামে ধান দিতে এসে হয়রানির ও নির্যাতনের শিকার না হয়। লেবাররা যেন অতিরিক্ত ধান না নেয় সেই দিকে আমাদের তীক্ষè নজর আছে। তবে ধান-চালের কোয়ালিটির সঙ্গে কোন আপোস নেই। কারন এই চাল আমরা মিলে ক্রয় করি। সেগুলো আবার ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রনের জন্য আমরা দরিদ্রদের মাঝে দিয়ে থাকি। এছাড়াও সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় যায় এই চাল। তাই আমরা এই দুর্নামের ভাগি হতে চাই না। তাই দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই। এর সাথে কোন আপোস হবে না।

মন্ত্রী বলেন, অনেকেই আড়তদার ব্যবসা করেন। কিন্তু তাদের পূর্বের লাইসেন্স নেই। যাদের পূর্বের লাইসেন্স নেই তাদেরকে অবশ্যই পূর্বের লাইসেন্স করে নিতে হবে। এবং সাত দিন পর পর খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তাদের রিটার্ন দাখিল করতে হবে। সাত দিনে কত ধান ক্রয় করলো, কোন মিল মালিকের কাছে বিক্রি করলো সেই নাম ও নাম্বার উল্লেখ করে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তাহলে আমরা একটা ধারনা পাব কোন মিলে কত ধান মজুদ রয়েছে। নাহলে আমরা হিসাব পাই না। গত বছর তথ্য বিভ্রান্তির কারনে আমরা একটু বিপদে পড়েছিলাম। তাই সেই বিপদে আমরা আর পড়তে চাই না। তাই আমরা আগে থেকেই সতর্ক থাকতে চাই। এছাড়াও মিল মালিকদের সময় মত চুক্তি ও সময় মত গুদামে চাল দেয়ার আহবান জানান।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সরকার কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের নায্যমুল্য নিশ্চিত করাসহ নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। কারন এ সরকার বিশ্বাস করে যে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কাজেই প্রধান মন্ত্রীর ইচ্ছায় ও নির্দেশে কৃষকদের সুযোগ সুবিধার মধ্যে কৃষি প্রনোদনা এবং কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচীসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আওতায় সারা দেশে লাখ লাখ কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রনোদনা বিতরন করা হচ্ছে।

এসময় ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব ড. নাজমানারা খানুমসহ খাদ্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা। এ উপলক্ষ্যে নওগাঁ স্থানীয় খাদ্য গুদামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন-অর-রশীদ।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজিৎ সরকার মনি ও জেলা প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শফিক ছোটন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম, রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জি এম ফারুখ হোসেন পাটোয়ারী, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শামসুল ওয়াদুদ, জেলা চাউল কল মালিক গ্রুপরে সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক প্রমুখ।

(বিএস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২১)