উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : চাঁদপুরে মা ও শিশু হাসপাতাল (প্রাঃ) এ  ভুল চিকিৎসায় জিতু বেপারী (২৫) নামের কাঁচামাল ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় হাসপাতালে থাকা আসবাবপত্র  ভাংচুর করে রোগীর স্বজনরা।

রবিবার ২ মে সকাল ৮টায় চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মা ও শিশু হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার কথা শুনে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, এসআই সুমন দেবনাথ, এএসআই মেজবাসহ পুলিশ সদস্যরা ছুটে আসেন।

জিতু বেপারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯নং উত্তর গবিন্দপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার স্বপন বেপারীর ছেলে। সে ঢাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করতো। জিতু গত ৮ মাস পূর্বে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী বর্তমানে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
জিতুর বোন রুনা আক্তার জানায়, বাড়িতে থাকা অবস্থায় কদিন যাবত জিতুর প্রচ- পেট ব্যাথা হয়।

পরে আমরা গ্রাম্য ডাক্তার সাইফুল ইসলাম (বাবু)র কথা অনুযায়ী চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মা ও শিশু হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ভর্তি করাই। ডাঃ বাবু জানায় জরুরি ভিত্তিতে জিতুর অপরেশন করতে হবে তার পেটের নাড়ি-ভুড়ি পেচিয় ছিদ্র হয়ে গেছে। ৩০ হাজার টাকা লাগবে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। শুক্রবার ভোরে জিতুর জ্ঞান ফিরে ও শনিবার রাত থেকে সে কালো বর্ণের হয়ে যায়। জিতুর অপারেশন করতে গিয়ে তারা নাড়ি ভুড়ি কেটে ফেলে। সেই যন্ত্রনায় রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।

জিতুর পিতা স্বপন বেপারী জানায়, আমার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে জিতু সবার বড়। আমি এ হাসপাতালে অপারেশন করতে রাজি হই নাই। গ্রাম্য ডাক্তার সাইফুল ইসলাম (বাবু) আমাকে বলছে এখানে ভালো অপারেশন হয়, চিন্তা করার কিছু নেই।

হাসপাতালের পরিচালক মোঃ মহসীন সর্দার জানায়, আমরা অপারেশন করার পূর্বে সম্মতিপত্রে তাদের স্বাক্ষর নিয়েছি। আর অপারেশন হয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, আজকে তাকে রিলিজ দেয়ার কথা ছিল। স্বজনরা রোগীর জ্ঞান ফিরলে অক্সিজেন খুলে কথা বলতে চায়, নার্সকে না বলে পানি খাওয়ায়। রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙ্গচুর করে। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয়া হলে অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

পরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সায়েদ সরকার, জেলা বিএমএ সভাপতি ডাঃ এনএন হুদাসহ অন্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে বসে মৃতের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষয়টি আপোষ মীমাংশা করেন।

(ইউ/এসপি/মে ০২, ২০২১)